প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৪ জুন, ২০২২

ইউক্রেনে রুশ হামলায় শত শত ঐতিহাসিক স্থান-স্থাপনা ধ্বংস

ইউক্রেনে চার মাস ধরে সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রুশ সেনারা। এই অসম যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ হতাহতের পাশাপাশি ধ্বংস হয়ে গেছে ইউক্রেনের ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন যে, ইউক্রেনের ১৫২টি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থান সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস হয়ে গেছে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, জাদুঘর, স্মৃতিস্তম্ভ, গীর্জা এবং অন্যান্য ধর্মীয় ভবন, গ্রন্থাগার ধ্বংস হয়ে গেছে। ইউনেস্কো বলছে, ইউক্রেন কর্তৃপক্ষকে সহায়তার প্রচেষ্টা অংশ হিসেবেই ক্ষয়ক্ষতির নথিপত্র তৈরি করা হচ্ছে।

ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অদ্রে আজুলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থানে বারবার এই হামলা বন্ধ করতে হবে। যেকোনো অবস্থাতেই কোনো সাংস্কৃতিক বা ঐতিহাসিক স্থানকে লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।

ইউনেস্কো বলছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে বহু ঐতিহাসিক স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে তিন-চতুর্থাংশই রাজধানী কিয়েভ, পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ এবং দোনেৎস্কের।

এদিকে ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছে। আঞ্চলিক গভর্নর জানিয়েছে, গত মঙ্গল ও বুধবার খারকিভে হামলা চালানো হয়।

খারকিভ অঞ্চলের গভর্নর ওলেহ সিনেহুবোভ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরের আবাসিক জেলাগুলো এবং বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার কামান হামলা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, রুশ দখলদাররা বেসামরিক লোকদের ওপর হামলা চালানোর ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দিচ্ছে না। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ওলেকসি অ্যারেসতোভিখ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, জনগণের মনে আতঙ্ক ছড়াতে এবং ইউক্রেনকে সেনা সরিয়ে নিতে বাধ্য করতেই খারকিভে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ইউক্রেনীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটির দিকে এগোনো চেষ্টা করছে রুশ বাহিনী। সেখানে তীব্র লড়াই চলছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে উরাগান মাল্টিপল রকেট লঞ্চার ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে খারকিভ পুলিশ প্রশাসন।

ডনবাস ‘ধ্বংস’ করতে চায় রাশিয়া : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন যে, রাশিয়া ডনবাস অঞ্চল ধ্বংস করতে চাচ্ছে। ওই অঞ্চলে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, এখানে দখলদারদের লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে। তারা ধাপে ধাপে পুরো ডনবাসকে ধ্বংস করতে চায়। এদিকে প্রেসিডেন্টের এক শীর্ষ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, পূর্বাঞ্চলীয় শহর সেভেরোদোনেৎস্ক এবং লিসিচানস্কে সংঘাত চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।

ওলেক্সি আরেস্তোভিচ নামের ওই উপদেষ্টা বলেন, রুশ বাহিনী শিগগির ওই শহরগুলোকে ঘিরে ফেলতে পারে এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে। কৌশলগত ভাবে রুশ বাহিনী ওই অঞ্চলে বিজয়ী হতে পারে বলে হুমকি দেখা দিয়েছে। কিন্তু সেখানে তাদের এখনো বড় ধরনের কোনো অর্জন নেই। ইউক্রেনের ভূখণ্ড রক্ষায় ভারী কামান সরবরাহের গতি আরো বাড়ানোর জন্য পশ্চিমা নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close