প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৩ জুন, ২০২২

জার্মানির প্রতিশ্রুত হাউইৎজার কামান ইউক্রেনের হাতে

ইউক্রেনের জন্য জার্মানির প্রতিশ্রুত ভারি অস্ত্রশস্ত্রের প্রথম চালানে জার্মানির স্ব-চালিত ছোট কামান বা হাউইৎজার কিয়েভে পৌঁছেছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ এ খবর নিশ্চিত করেছেন। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের।

রাশিয়ার তুলনায় ইউক্রেনের অস্ত্রের মজুদ এমনিতেই কম; রুশ সেনাদের মোকাবেলা করতে গিয়ে দেশটির সোভিয়েত আমলের অস্ত্রভা-ারে থাকা গোলাবারুদে টানও পড়েছে, এজন্য পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে আরও অত্যাধুনিক কামান চাইছে তারা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রেজনিকভ বলেন, ‘আমাদের গুদাম ফের পূরণ হচ্ছে। ইউক্রেনের কামান পরিবারে জার্মান পানসাহাউবিৎসা ২০০০, সঙ্গে প্রশিক্ষিত ইউক্রেইনীয় ক্রু যুক্ত হয়েছে ।’

পানসাহাউবিৎসা ২০০০ জার্মানির ভা-ারে থাকা শক্তিশালী কামানের মধ্যে অন্যতম; এটি ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরের লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে।

চলতি বছরের মেতে জার্মানি ইউক্রেনকে ৭টি স্ব-চালিত হাউইৎজার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। নেদারল্যান্ডসও কিয়েভকে এই ধরনের ৫টি কামান পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রি ইয়েরমাক এক পোস্টে জার্মানির প্রতিশ্রুতি দেওয়া অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্রের কথাও উল্লেখ করেছেন। সেসব অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ৩০টি গিপাদ ট্যাংক, তিনটি এমএআরএস টু মাল্টিপল রকেট লঞ্চার এবং কাঁধে রেখে ছোড়া যায় এমন ৫০০টি স্টিংগার ক্ষেপণাস্ত্র। কিয়েভের আগে রুশ সেনাদের আক্রমণ প্রতিহতে মিত্রদের কাছে এক হাজারটি হাউইৎজার, ৫০০ ট্যাংক ও এক হাজার ড্রোনসহ অত্যাধুনিক ভারি অস্ত্রশস্ত্র চেয়েছিল।

প্রতিবেশী দেশটিকে ‘নিরস্ত্র’ ও ‘নাৎসিমুক্ত’ করার লক্ষ্যে রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তাদের ভাষায় ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ নামে। এরই মধ্যে তারা ইউক্রেনের ২০ শতাংশের মতো এলাকা দখলে নিয়ে নিয়েছে। রুশ আক্রমণ ঠেকাতে অন্য যেসব দেশ ইউক্রেনকে স্বচালিত হাউৎজার দিচ্ছে তার মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, নরওয়ে ও পোল্যান্ড।

খারকিভে রুশ হামলায় ১৫ জন নিহত : ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভে রুশ বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার হামলার এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা বেসামরিক নাগরিক বলে দাবি করেছেন আঞ্চলিক গভর্নর ওলেহ সিনেহুবভ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে সিনেহুবভ জানান, কেবল খারকিভ শহরেই পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হন ১১ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আট বছর বয়সী এক কন্যাশিশু রয়েছে বলেও তিনি জানান।

খারকিভের প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের চুহুইভে আরও ছয়জন নিহত হন। এ ছাড়া খারকিভ শহরের ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের জোলোচিভে তিনজন নিহত হন বলে জানান গভর্নর।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছে রুশ বাহিনী। চলমান যুদ্ধে এর আগেও এই শহরে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করা হয়েছিল। তখন যুদ্ধে ‘ফ্রন্ট লাইন শহরে’ পরিণত হয় খারকিভ।

এদিকে রুশ বাহিনী দনবাস অঞ্চলে ফ্রন্ট লাইনে থাকা একটি গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন।

কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর সেভেরোদোনেৎস্ক ও লিসিচানস্ক শহরের কাছের এ গ্রাম হাতছাড়া হওয়ার কথা ঘোষণা দেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। ফলে দনবাস অঞ্চলের আরও ভেতরে ঢুকে পড়ল রুশ বাহিনী।

সেভেরোদোনেৎস্ক জেলা সামরিক প্রশাসনের প্রধান রোমান ভ্লাসেঙ্কো গতকাল জানান, তোশকিভকা বসতি এখন ‘রুশ বাহিনী পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছে’।

যুদ্ধের আগে তোশকিভকায় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্কের সেভেরোদোনেৎস্ক শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে গ্রামটির অবস্থান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close