প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২০ জানুয়ারি, ২০২২

মুসলিম বিশ্বের স্বীকৃতি চায় তালেবান

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসান আখুন্দ। গতকাল বুধবার রাজধানী কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আফগান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে বিশ্বের সব সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এমনকি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সব ধরনের শর্ত পূরণ করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন হাসান আখুন্দ। খবর রয়টার্সের।

মার্কিন সামরিক বাহিনীসহ সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের মুখে গত বছরের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান গোষ্ঠী। এরপর সেপ্টেম্বরের শুরুতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তারা। সেই সরকারের অন্যতম শীর্ষ পদে বসেন মোল্লা হাসান আখুন্দ। যদিও এরপর থেকে বড় কোনো সম্প্রচারমাধ্যমে আর দেখা যায়নি তাকে।

গত সেপ্টেম্বরের পর বুধবারই প্রথম বৃহৎ পরিসরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন মোল্লা আখুন্দ। কাবুলে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশের সরকার, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর কাছে আমার আবেদন, আপনারা আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি দেওয়া শুরু করুন।’

রয়টার্স বলছে, মোল্লা হাসান আখুন্দ ও তালেবান প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জাতিসংঘের কর্মকর্তারাও বুধবারের এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তালেবান আফগানিস্তানে অর্থ প্রবেশের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিলের আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়ের ব্যবস্থা না করায় দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।

হাসান আখুন্দ বলেন, ‘সংকট কাটাতে স্বল্পমেয়াদি সহায়তা কোনো সমাধান নয়। বিদ্যমান সমস্যাগুলো মৌলিকভাবে সমাধানের একটা পথ আমাদের খোঁজার চেষ্টা করতে হবে।’

এমনিতেই দশকের পর দশক ধরে যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত আফগানিস্তান। গত আগস্টে তালেবান কাবুলের ক্ষমতা দখলের পর থেকে সেই পরিস্থিতি দিনে দিনে কেবল খারাপই হয়েছে। আফগানিস্তানে বর্তমানে যা আর্থিক পরিস্থিতি, তাতে এই প্রবল শীতে লাখ লাখ মানুষ প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাবারের অভাবের মধ্যে দিনযাপন করছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনো পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাও আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়।

ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ ছাড়া তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই বিদেশি সহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল আফগানিস্তানের অর্থনীতি। আগস্ট থেকে সেই সহায়তা আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক ও মানবিক সংকট কেবলই বেড়েছে।

এর আগে আফগানিস্তানের লাখ লাখ নাগরিক ‘মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে বলে গত সপ্তাহে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিকে সম্ভাব্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পশ্চিমা দেশগুলোতে বাজেয়াপ্ত সম্পদ ছেড়ে দেওয়া এবং আফগান ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে অচলাবস্থা থেকে কাটিয়ে জোরেশোরে চালু করার দাবিও জানিয়েছিলেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close