প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১১ অক্টোবর, ২০২১

বেইজিংয়ের চাপে নত হবে না তাইওয়ান

চীনের চাপে নত হবে না তাইওয়ান। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে একীভূত করার ঘোষণা দেওয়ার পর তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। খবর বিবিসির।

তাইওয়ানকে ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে স্বশাসিত এই দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বলেছেন, তারা বেইজিংয়ের চাপে নত হবেন না। তাইওয়ান তার গণতান্ত্রিক জীবনধারা অব্যাহত রাখবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা যত অর্জন করব, ততই চীনের দিক থেকে আরও বেশি চাপ আসবে।’

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ‘পুনরেকত্রীকরণ সম্পন্নের’ অঙ্গীকারের পরদিন গতকাল রোববার তাইওয়ানের জাতীয় দিবসে দেওয়া ভাষণে সাই এসব কথা বলেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।

তাইওয়ান নিজেদের সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করলেও চীন দ্বীপটিকে দেখে নিজেদের ‘বিচ্ছিন্ন প্রদেশ’ হিসেবে। পুনরেকত্রীকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বল প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি বেইজিং। কয়েক দিন আগেই চীন তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে রেকর্ড সংখ্যক জঙ্গি বিমান পাঠিয়েছে; তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টকে সতর্ক করতেই এসব বিমান পাঠানো হয় বলেও ধারণা অনেক পর্যবেক্ষকের। রোববার সাই বলেছেন, চীন যে পথ ঠিক করে দিয়েছে, তাইওয়ানকে তা মেনে নিতে বাধ্য করা যাবে না। বেইজিংয়ের প্রস্তাবিত পথে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব নেই, বলেছেন তিনি।

তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে চীনের সামরিক বিমানের প্রবেশে জাতীয় নিরাপত্তা ও বিমান চলাচল সংক্রান্ত নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি ।

সাই বলেন, ‘পরিস্থিতিটি ছিল গত ৭২ বছরের মধ্যে অন্য যে কোনো সংকটকালের তুলনায় অনেক বেশি জটিল ও অস্থির।’ তাইওয়ান ‘তাড়াহুড়ো’ করবে না, তবে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করবে, বলেছেন তিনি।

তিনি সমান সমান অবস্থানে থেকে চীনা নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাবও পুনর্ব্যক্ত করেন; বেইজিং এখন পর্যন্ত এ প্রস্তাব কানে নেয়নি।

শনিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, পুনরেকত্রীকরণ শান্তিপূর্ণভাবেই হওয়া উচিত। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এ শীর্ষ নেতা সতর্ক করে এও বলেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলায় চীনা জনগণের ‘গৌরবময় ঐতিহ্য’ আছে। ‘মাতৃভূমির পুনরেকত্রীকরণের যে ঐতিহাসিক কাজ তা সম্পন্ন করতে হবে এবং অবশ্যই সম্পন্ন হবে’, বলেছেন তিনি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা চললেও পরিস্থিতি এখনও ১৯৯৬ সালের মতো পর্যায়ে পৌঁছায়নি। সেবার চীন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিঘ্নিত করার চেষ্টায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল; বেইজিংকে থামাতে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই অঞ্চলে বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করতে হয়েছিল। চীনের সাম্প্রতিক শক্তি প্রদর্শনে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি ‘তাইওয়ান নিয়ে সমঝোতা’ মেনে চলার ব্যাপারে রাজি হয়েছেন।

ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে যে ‘এক চীন’ নীতি মেনে চলছে, বাইডেন সম্ভবত সেটিকেই ‘তাইওয়ান নিয়ে সমঝোতা’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close