আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৩ জানুয়ারি, ২০১৮

লিলিপুটদের গ্রাম

জোনাথন সুইফটের গালিভার ট্রাভেলস গল্পে গালিভার একবার লিলিপুটদের দেশে চলে গিয়েছিলেন। যেখানে বেশির ভাগ মানুষের উচ্চতা ছিল ১৫ সেন্টিমিটার। যদিও গালিভার ট্রাভেলসের সেই লিলিপুট গ্রাম শুধু কল্পকাহিনিতেই সীমাবদ্ধ ছিল; কিন্তু বাস্তবে মাখুনিক নামে এমনই একটি গ্রাম আছে পূর্ব ইরানে। আফগানিস্তানের সীমান্ত ঘেঁষে গ্রামটির অবস্থান। ঐতিহাসিকদের মতে, গ্রামটি প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরনো। এখানকার মানুষ ইরানের স্বাভাবিক উচ্চতার মানুষের চেয়ে কমপক্ষে ৫০ সেন্টিমিটার খাটো। ২০০৫ সালে এই গ্রামে গবেষকরা ২৫ সেন্টিমিটার উচ্চতার একটি মমি খুঁজে পান। তারপর থেকে তারা বিশ্বাস করেন, মাখুনিকসহ আশপাশের গ্রামে একসময় বেটে মানুষদের বসবাস ছিল। প্রতœতত্ত্ববিদরা এই গ্রাম নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন। বাড়িগুলোর আকার-আকৃতিই বলে দেয় যে, সেখানকার মানুষ ছোট আকৃতির ছিল। এর প্রমাণও মিলেছে পরে। প্রতœতত্ত্ববিদরা সেখানে প্রথম দফায় মোট ৮০০টি কবরের সন্ধান পেয়েছেন। সেই কবরগুলোতে যেসব কঙ্কাল বা দেহের অবিশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে, সেগুলোর সবই একেবারে বামন আকৃতির মানুষের। গবেষকদের মতে, গ্রামটিতে বসবাসকারী মানুষগুলোর গড়া উচ্চতা ছিল ৩ ফুট। গবেষকরা বলছেন, দুর্গম পাহাড়ের ফাঁকে অবস্থিত এই গ্রামের মানুষ খর্বকায় হওয়ার অন্যতম কারণ অপুষ্টি। কারণ সেই রকম কোনো পুষ্টিকর খাবারই এরা খেতে পেত না। এ ছাড়া নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে বিয়ে, পারদযুক্ত দূষিত পানি পানের কারণেও এখানকার অধিবাসীদের আকৃতি কম বলে তারা মনে করছেন। এই গ্রামে এখন ৭০০ জন অধিবাসী রয়েছেন।

তারা তাদের পূর্বপুরুষদের মতো অতটা খাটো নন। তবে তাদের বাড়িগুলো পূর্বপুরুষদের মতোই। পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে প্রাচীন নকশার ছোট উচ্চতার বাড়িতে তারা অবস্থান করেন।

১৯৪৬ সালে গ্রামটির অস্তিত্ব আবিষ্কার হয়। ধীরে ধীরে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে রাস্তাও তৈরি হয়। বাইরে থেকে যানবাহন যাতায়াত শুরু করে। মানুষের জীবনযাত্রাও কিছুটা পাল্টাতে থাকে। তার পরও এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা সহজ নয়।

এখানকার বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা পুরনো রীতির পোশাক পরতে ভালোবাসেন। বিদ্যুতের চেয়ে আগুনের ব্যবহারেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তারা।

গ্রামটিতে মাত্র একটিই স্কুল রয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় সেখানকার মসজিদে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করে মাখুনিকের শিশু-কিশোর ও তরুণরা। এ ছাড়া তারা স্থানীয় স্কুলে অন্যান্য শিক্ষাও গ্রহণ করে। নিজেদের গ্রামটিকে ভালোবাসে মাখুনিকের মানুষেরা। এখানকার তরুণরা কাছের কোনো শহরে কাজের প্রয়োজনে গেলে অর্থ উপার্জন করে, খাবার কিনে আবার গ্রামেই ফিরে আসে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist