প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
গাজীপুর ও নেত্রকোনায় দুজনের ফাঁসির আদেশ
গাজীপুর ও নেত্রকোনায় পৃথক পৃথক দুটি হত্যা মামলায় দুজনকে ফাঁসির দন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলা দুটির রায় দেন আদালত। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য থেকে জানা যায়-
গাজীপুর : গাজীপুরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর আগুনে পোড়ানোর মামলায় স্বামীর ফাঁসির দন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। দন্ডপ্রাপ্ত মো. আয়নাল হক (৩৫) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাইমাইল পশ্চিমপাড়া এলাকার মো. আবদুল মান্নানের ছেলে। গতকাল সকালে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। হত্যার পর আগুনে পোড়ানোর কারণে অপর একটি ধারায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল।
গাজীপুরের আদালতের পিপি হারিছ উদ্দিন আহম্মদ জানান, আনোয়ারা বেগমের প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে আয়নাল হকের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। আনোয়ারার আগের সংসারে আনোয়ার হোসেন নামে একটি ছেলে রয়েছে এবং আয়নাল ও আনোয়ারা দম্পতির সংসারে ৬ বছরের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। আগের ঘরের সন্তান এবং স্ত্রী আনোয়ারার জমি আয়নাল হক ও তার ছেলের নামে লিখে দেওয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ হয়। এর জেরে ২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি রাতে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে আনোয়ারাকে খাইয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে আয়নাল। পরে পেট্রল ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আয়নাল হক ও নিহতের ভাই আমজাদ হোসেন আঞ্জুকে আটক করে। এ ঘটনায় কোনাবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পরে থানা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআইসহ ৬টি সংস্থা তদন্ত করে। পিবিআইয়ের তদন্তে আমজাদ হোসেন মঞ্জুর সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে স্বামী আয়নাল হককে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর আয়নাল হকের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। গতকাল সকালে নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও শুনানি শেষে আদালত আয়নালকে ফাঁসির দন্ড দেন।
নেত্রকোনা : নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার দায়ে একজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। নেত্রকোনার জেলা ও দায়রা জজ কে এম রাশেদুজ্জামান গতকাল দুপুরে পাঁচ বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
সাজাপ্রাপ্ত রুবেল মিয়া (২৭) আটপাড়া উপজেলার মোগলহাট্টা গ্রামের মো. হেরিমের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় রুবেল আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন।
আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি সাইফুল ইসলাম প্রদীপ মামলার নথির বরাতে জানান, ২০১২ সালের ৮ অক্টোবর স্থানীয় গণেশ হাওরে আবুল মনসুরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এরপর ১০ অক্টোবর তার বাবা সিদ্দিক মিয়া তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। পরের বছর ২১ মে শুধু রুবেলকে দায়ী করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
পিপি সাইফুল বলেন, রুবেল মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের আবুল মনসুরের জমির বিরোধ ছিল। এর জেরে রুবেল তাকে হত্যা করেন বলে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।
"