নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

‘ধ্বংসাত্মক কাজে’ উৎসাহ চুক্তি বাতিল মাহতাবের

স্কুলের পাঠ্যবইয়ের পাতা ছিঁড়ে আলোচনায় আসা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে চাকরিতে না রাখার কারণ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আসিফ মাহতাব উৎস কর্তৃক বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত সপ্তম শ্রেণির জাতীয় পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছেঁড়া এবং পাবলিক ফোরামে অন্যদের একই কাজ করতে বলার ঘটনাটিকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় একটি ধ্বংসাত্মক কাজ বলে মনে করে এবং এ ধরনের অশিক্ষকসুলভ আচরণ কোনোভাবেই সমর্থন করে না।’

গত ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ‘শরীফার গল্প’ নামের একটি সচেতনতামূলক পাঠ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান আসিফ মাহতাব। ‘শরীফার গল্প’ পাঠে বলা হয়েছে ‘হিজড়া ও তৃতীয় লিঙ্গের’ মানুষের জীবনের কথা। কিন্তু আসিফ মাহতাবের দাবি, পাঠ্যবইয়ে ‘ট্রান্সজেন্ডারের গল্প’ ঢুকিয়ে ‘সমকামিতাকে’ উসকে দেওয়া হচ্ছে। সেদিন নিজে ওই বই থেকে ‘শরীফার গল্প’ ছিঁড়ে ফেলার পাশাপাশি অন্যদেরও একই কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা আলোচনার মধ্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০ জানুয়ারি এক বিবৃতি দিয়ে জানায়, আসিফ মাহতাবের সঙ্গে বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো চুক্তি নেই। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী আসিফ মাহতাবকে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামে। বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শরীফার গল্প পর্যালোচনা করার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। সে সময় আসিফ মাহতাবের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করার কারণ ব্যাখ্যা না করলেও সোমবার বিবৃতিতে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে বলা হয়, ‘সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় সব মত ও আদর্শের জন্য সহনশীলতা ও সম্মানের ভিত্তিতে গঠনমূলক আলোচনা, বিতর্ক এবং পারস্পরিক মতবিনিময়ে বিশ্বাস করে। কিন্তু ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাতীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য আচরণ, যা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় সমর্থন করে না।’

প্রকাশ্যে পাঠ্যবই ছেঁড়ার বিষয়টিকে ‘অশিক্ষকসুলভ’ আখ্যা দিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ‘এ কারণে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪ সালের স্প্রিং সেমিস্টারের জন্য আসিফ মাহতাব উৎসকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নতুন চুক্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ব্র্যাক মাহতাবকে এ সেমিস্টারের প্রস্তুতিমূলক কাজে তার সময় ও প্রচেষ্টার জন্য পারিশ্রমিক প্রদান করবে।’ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় সব ক্ষেত্রে দেশের সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং দেশের প্রচলিত বিধিবিধান মেনে চলার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় সমকামিতার প্রচার ও প্রসারের সঙ্গে যুক্ত- সামাজিক মাধ্যমে কিছু মহলের এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ‘তবে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি মানুষের সমান অধিকার এবং সম্ভাবনা বিকাশের পথে সমান সুযোগ সৃষ্টিতে বিশ্বাস করে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close