শামীম রেজা ডাফরুল, গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা)

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪

কারিগরিবিদ্যা

শাহীনের ৪০ আবিষ্কার

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ

প্রতিদিনের কাজে ব্যবহারযোগ্য ৪০টিরও বেশি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের এক শিক্ষার্থী। এ কারণে তিনি এলাকায় খুদে বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। নতুন নতুন আবিষ্কারের নেশা তার ধ্যান ও জ্ঞান। এ নেশায়ই দিন-রাত মাতোয়ারা যুবক শাহীন।

কলেজে ভর্তির পরপরই ২০২৩ সালে ৪৪তম বিজ্ঞানমেলায় অংশ নেন শাহীন। মেলায় তার আবিষ্কারগুলো উপজেলা-জেলা, বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার এনে দেয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধু মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন তিনি। তার আবিষ্কারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- জ্বালানি তেল ও বিদ্যুৎ ছাড়াই কনটেইনার-বোতলের মাধ্যমে বায়ুশক্তিকে ব্যবহার করে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন যন্ত্র, ভূমিক¤প সতর্কতা অ্যালার্ম সিস্টেম, চুরি রোধে অনলাইন মেসেজিং সিস্টেম, মোবাইল ফোনের গোপনীয়তা রক্ষার্থে এক ধরনের বিশেষ চশমা। (যা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনকে ব্যবহারকারীর চোখে ঠিকঠাক দেখালেও অন্যরা চোখে সাদা দেখতে পাবে)। বর্তমানে বেতার-বিদ্যুৎ সঞ্চালন বিষয়ে গবেষণা করছেন খুদে এই বিজ্ঞানী। অল্প দূরত্বে সাফল্য পেলেও তা তিন কিলোমিটার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন তিনি।

জানা যায়, শাহীনের বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের খুকশিয়া গ্রামে। শাহীনের বাবা শাহারুল ইসলাম পেশায় দর্জি ছিলেন। ২০২১ সালে নাকাইহাট বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পাস করেন শাহীন। আর্থিক সমস্যার কারণে বিজ্ঞান বিভাগে না হলেও বর্তমানে নাকাইহাট ডিগ্রি কলেজে মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করছেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাতের কাছে পাওয়া জিনিসপত্র দিয়ে শাহীন বানিয়ে ফেলেছেন অনেক যন্ত্র। একের পর এক সফলতা তাকে এগিয়ে যেতে আরো উদ্বুদ্ধ করেছে। এ বিষয়ে শাহীন জানান, ছোটবেলা থেকেই বিশেষ কিছু দেখলেই তা নিয়ে গবেষণা-আবিষ্কারের অদ্ভুত এক আগ্রহ সৃষ্টি হয় মনে। যেখানেই কোনো সমস্যা দেখছেন সেটা সমাধান করার চেষ্টা করেন তিনি। তার লক্ষ্য এসব যন্ত্র সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়া। সেই সঙ্গে গবেষণাকে আরো এগিয়ে নেওয়া। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আবিষ্কারে আরো ভূমিকা রাখতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

শাহীনের মা শোভারাণী বলেন, আবিষ্কারের নেশা আমার ছেলের (শাহীনের) ছোটবেলা থেকেই। পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে শাহীন চতুর্র্থ। স্বামীর মৃত্যুর পর অনেক কষ্টে তাদের মানুষ করেছি। কারিগরি বিদ্যায় ছেলের অর্জনে আমি গর্বিত। নাকাইহাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফ আলী প্রধান বলেন, শাহীন অত্যন্ত প্রতিভাবান। অভিনব আবিষ্কার তাকে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান এনে দিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close