প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২১ জুন, ২০২২

ব্ল্যাক হোলের রহস্য!

মহাকাশে ব্ল্যাক হোল এমনকি আলোও গিলে ফেলে। এমন রহস্যময় মহাজাগতিক বস্তু সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের সীমা নেই। মহাকাশে ভাসমান জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ব্ল্যাক হোলসহ ব্রহ্মা-ের রহস্য উন্মোচন করতে পারে। মানুষ শুধু ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বরের প্রভাব দেখতে পায়। কখনো সেটি স্পেস বেঁকিয়ে দেয়, অথবা অদৃশ্য মহাজাগতিক বস্তু হিসেবে কোনো নক্ষত্র প্রদক্ষিণ করে। ঠিক কোন কোন পর্যায়ে পদার্থ এই ব্ল্যাক হোলের মধ্যে প্রবেশ করে, তা পরীক্ষা করা হয়েছে। দেখা গেছে, সে সময়ে আশপাশের পরিবেশ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এমন ব্ল্যাক হোলের চারপাশে অতিরিক্ত পরিমাণ গ্যাস থাকলে ঘর্ষণের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।

ঘর্ষণের ফলে বিশাল মাত্রায় উত্তাপ সৃষ্টি হয়। তখন সেটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। ফলে ব্ল্যাক হোলের আশপাশে অতিরিক্ত মাত্রার আলো দেখা যায়। এমন এক ব্ল্যাক হোল গোটা গ্যালাক্সির সব নক্ষত্রের তুলনায় অনেক বেশি আলো সৃষ্টি করতে পারে। সেই আলো কিন্তু কেন্দ্রভাগের খুবই ছোট এক অংশ থেকে আসে। বর্তমান এই বিশ্বব্রহ্মা-ে অসংখ্য গ্যালাক্সি রয়েছে। সবকটির মাঝেই একটি করে ব্ল্যাক হোল থাকলে অতীতের ব্রহ্মা-েও বিশাল সংখ্যায় এমন কৃষ্ণ গহ্বর ছিল বলে ধরে নিতে হবে। এখনো পর্যন্ত প্রায় ৩০০-এর মতো ব্ল্যাক হোল শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। পৃথিবীতে উদ্ভিদ জগতের উৎস বিশ্লেষণ করতে হলে হয়তো ৩০০ বিশাল গাছ দেখতে এবং পরীক্ষা করা যাবে। এমন বিশালাকার সিকোইয়াস গাছ বাইরে থেকে অবশ্যই বিস্ময়কর মনে হবে। কিন্তু সেটি কীভাবে এত বড় হলো, সেটা হয়তো বোঝা যাবে না। চারাগাছ হিসেবে এবং অর্ধেক বড় হওয়ার পর সেটি কেমন দেখতে ছিল, সেই প্রশ্নেরও উত্তর পাওয়া যাবে না।

সেই উপলব্ধির ভিত্তিতে শুধু সবচেয়ে বড় সিকোইয়াস গাছগুলোর দিকে নজর দেওয়ার চেষ্টা করাই যথেষ্ট নয়, ছোট অবস্থায় সেগুলোর অবস্থা খতিয়ে দেখাও জরুরি। সেই জ্ঞান সম্বল করে এমন ব্ল্যাক হোলের বিবর্তন প্রক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করা যায়। সেগুলোর বৃদ্ধির পর্যায় দেখা যাচ্ছে। কিন্তু প্রত্যেকটি পর্যায় বেশ দীর্ঘমেয়াদি। অর্থাৎ বিশাল আকার ধারণ করতে, পদার্থের পরিমাণ দ্বিগুণ হতে ১০ কোটি বছরেরও বেশি সময় লাগে। বর্তমানে এমন সব বিশাল আকারের ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পাওয়া গেছে, যেগুলো বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের ৬০, ৭০ কোটি বছর পর আমাদের সূর্যের তুলনায় ১০০ কোটি গুণ বড়। এত কম সময়ের মধ্যেই এমন বৃদ্ধি হয়েছে। সেটা কীভাবে ঘটে, মানুষ তা এখনো ভালো করে জানে না। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ সেই রহস্য সমাধান করতে চলেছে। গ্যালাক্সিগুলো একেবারে আদিকালের ব্ল্যাক হোলের অংশবিশেষের সঙ্গে কী করে, আমরা তা দেখতে পাব। কয়েকশ কোটি বছর পরেও কি সেগুলো একই রকম দেখতে হয়? নাকি সেগুলোর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে? যেমন সেগুলোর আকার কি কিছুটা এলোমেলো? এমন প্রশ্নের জবাব পেলে বিশাল ভরসম্পন্ন ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে। এ ক্ষেত্রে বিশাল বিস্ময় অপেক্ষা করে রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তখন শুধু ব্ল্যাক হোলের আদি রূপ নয়, অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তু সম্পর্কেও অনেক কিছু জানা যাবে। সেই প্রশ্নের উত্তর এখনই ফাঁস করা সম্ভব নয়। তা না হলে সব উত্তেজনাই বৃথা হবে। জেমস ওয়েব মহাবিস্ফোরণের রহস্য উন্মোচনে আরো অগ্রগতি ঘটাবে। বিশেষ করে ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে আরো জ্ঞান অর্জন করা যাবে। সবাই জানতে চায়- আমি কোথা থেকে এসেছি? কোথায় যাচ্ছি? ব্রহ্মা-ের অতি দীর্ঘ ইতিহাস সম্পর্কে মানুষ খুঁটিয়ে জানার চেষ্টা করে চলেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close