প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৯ মে, ২০২২

নানা আয়োজনে রবীন্দ্র উদ্‌যাপিত

করোনা অতিমারির কারণে গত দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, খুলনার দক্ষিণডিহিতে, নওগাঁর পতিসরে ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবি গুরুর ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপিত হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট :

কুষ্টিয়া : সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে তিন দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠানমালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সাংসদ সেলিম আলতাফ জর্জ। স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। আলোচনা সভায় স্মারক বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সনৎ কুমার সাহা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে এত সমৃদ্ধ করেছেন, যার কোনো তুলনা নেই। কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে তিনি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন। সেখানে তিনি অসংখ্য সাহিত্য রচনা করেন। কাজেই এর ঐতিহ্য ও গৌরব অনেক।

রবীন্দ্র গবেষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সনৎ কুমার সাহা তার স্মারক বক্তব্যে বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথকে পরিবারের পক্ষ থেকে শিলাইদহে পাঠানো হয়েছিল মূলত পৈতৃক জমিদারি দেখামোনার জন্য। কিন্তু জমিদারিত্ব এবং প্রজাসত্ত্বের মধ্যে বিবদমান ব্যবধান তাকে ব্যথিত করেছিল। সে কারণেও তিনি আরো বেশি মনোযোগী হয়ে ওঠেন তার সাহিত্য প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটাতে। আলোচনা শেষে মূল মঞ্চে রবীন্দ্রসংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক পরিবেশন করেছেন কুষ্টিয়া জেলা ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ের রবীন্দ্রশিল্পীরা।

খুলনা ব্যুরো : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি খুলনার ফুলতলা উপজেলার দক্ষিণডিহির রবীন্দ্র-মৃণালিনীর স্মৃতিধন্য ভবন, রবীন্দ্র কমপ্লেক্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী ও লোকমেলা।

এদিকে, দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্সে খুলনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়েছে। আগামী ৯ মে বিকাল সাড়ে ৪টায় আলোচনা সভা এবং ১০ মে বিকাল সাড়ে ৪টায় আলোচনা সভা ও সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।

অন্যদিকে, খুলনার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

নওগাঁ ও আত্রাই : পতিসরে রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল থেকে গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় শিশু-কিশোররাসহ বিভিন্ন বয়সি মানুষের সমাগম ঘটে। সকাল ১০টায় পতিসর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে কবিগুরুর ১৬১তম জন্মোৎসবের উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে কাছারিবাড়ি চত্বরে রাজশাহী চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও নওগাঁ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘রংতুলিতে রবীন্দ্রনাথ’ চিত্র প্রদর্শনী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার ও আনোয়ার হোসেন। এ ছাড়া নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

দেবেন্দ্র মঞ্চে ‘মানবতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক স্মারক আলোচনা অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আশরাফুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি ড. পিএম শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের পরিচালক আলী রেজা আবদুল মজিদ ও নওগাঁ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম।

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : গতকাল শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। আমাদের জীবন মানের পরিবর্তন করতে হলে রবীন্দ্রনাথকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রবীন্দ্রনাথকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন বলেই তিনি সব আন্দোলন-সংগ্রামে সফল হয়ে ছিলেন।’

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন আয়োজিত শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করে অনুষ্ঠানমালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজম ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শামীম খান এবং সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চয়ন ইসলাম। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর আজাদ রহমান, পৌরসভার মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদী, পুলিশ সুপার ফারহানা ইয়াসমিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা প্রমুখ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close