নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আত্মহত্যা

পনের মাসে ১৫০ শিক্ষার্থীর প্রাণ ঝরল

করোনাকালে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবনের ওপর মানসিক চাপ ছিল। পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশা, পরিবারের শাসন, কোনো কিছু বায়না ধরে না পাওয়া, প্রেমঘটিত টানাপড়েন, আর্থিক সংকট, বিষণœতা ও একাকিত্বসহ ছোট ছোট সমস্যায়ও অনেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে তারা তুচ্ছ ঘটনায়ও আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করেনি।

জানা গেছে, দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ১৫ মাসে অন্তত ১৫১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে ৭৩ জন স্কুল শিক্ষার্থী, ৪২ জন বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, ২৭ জন কলেজ শিক্ষার্থী ও ২৯ জন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের বেশির ভাগের বয়স ১২ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। গত বছরের ১৮ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর থেকে গত ৪ জুন পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে গতকাল রবিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও আর ফেরা হলো না তাদের।

সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আত্মহত্যা করার ক্ষেত্রে অনেক বিষয় কাজ করে। ব্যক্তিবিশেষে ক্ষেত্রগুলো ভিন্ন হয়ে থাকে। নিজের স্বার্থে আঘাত লাগা, চাহিদার সঙ্গে প্রাপ্তির ব্যবধান, অসহায়ত্ব, কর্মহীনতা, নৈতিক মূল্যবোধ একেবারে ফুরিয়ে যাওয়া, অর্থ সংকট ও চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে না নিতে পারাসহ বেশ কয়েকটি কারণে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। বিশেষ করে করোনার ঘরবন্দি সময়ে মানসিক অস্থিরতা এর জন্য অন্যতম দায়ী।

তরুণদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশন বলছে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ১৪ হাজার ৪৩৬ জন নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করেছেন। সংগঠনটির দাবি করোনাকালে আত্মহত্যার প্রবণতা প্রায় ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। মোট আত্মহত্যার মধ্যে ৫৭ শতাংশ নারী এবং ৪৩ শতাংশ পুরুষ।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. আবদুল ওয়াহাব বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা ঘরে বন্দি, খেলাধুলা ও বন্ধু-বান্ধবের সান্নিধ্য তারা পায়নি। অটোপাস দিয়েছে। এ রকম করুণা তো অনেক শিক্ষার্থীর কাম্য নয়।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close