নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ এপ্রিল, ২০২১

আবদুল মতিন খসরু চিরঘুমে

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশেই আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু এমপিকে সমাহিত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পঞ্চম ও শেষ জানাজা শেষে এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের দাফন সম্পন্ন হয়।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত বুধবার বিকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবদুল মতিন খসরু (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। সাবেক এই মন্ত্রী গত ১৬ মার্চ থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত মঙ্গলবার থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।

মতিন খসরুর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এ ছাড়া আবদুল মতিন খসরুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।

সংসদ সদস্য মতিন খসরুর মরদেহ প্রথম জানাজার জন্য বৃহস্পতিবার নেওয়া হয় ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে। এদিন সকাল সাড়ে ৮টায় জানাজা শেষে সকাল ১০টায় বাংলাদেশ সপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর মরদেহ কুমিল্লা নিয়ে আসা হয়। পরে তার নির্বাচনী আসন কুমিল্লার বুড়িচং কলেজ মাঠে বাদ জোহর তৃতীয়, বিকাল ৪টায় ব্রাহ্মণপাড়া হাইস্কুল মাঠে চতুর্থ এবং বাদ আসর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণপাড়া মিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পঞ্চম জানাজা শেষে দাফন করা হয়। প্রতিটি জানাজার আগে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

গতকাল সকাল ১১টার দিকে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সমিতি ভবন প্রাঙ্গণে আবদুল মতিন খসরু জানাজা শেষে তার কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এখানে জানাজায় অংশ নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন স্তরের আইনজীবীরা।

জানাজা শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন খসরুকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানায় পুলিশের একটি দল। এরপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের পক্ষ থেকে মতিন খসরুর প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রধান বিচারপতি, আইনমন্ত্রী, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সহকর্মী আইনজীবী, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

তার আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রয়াত সভাপতি আবদুল মতিন খসরুর সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন। পরে মতিন খসরুর ছেলে মুনায়েম ওয়াসিফ তার বাবার জন্য দোয়া চান। এই বিশিষ্ট আইনজীবীর মৃত্যুতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।

আবদুল মতিন খসরু কুমিল্লা-৫ আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য। ১৯৯৬-২০০১ আওয়ামী লীগ সরকারে তিনি আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। তার জন্ম ১৯৫০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মিরপুর গ্রামে। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং কুমিল্লা জেলার অবিভক্ত বুড়িচং থানার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ছিলেন। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close