তাস খেলার কার্ডেও লিঙ্গবৈষম্য, রানির চেয়ে রাজার কদর বেশি। এই বৈষম্য দূর করতে এক ডাচ তরুণী নিজেই লিঙ্গনিরপেক্ষ কার্ডের ডিজাইন করে তা বিক্রি করছেন। গত গ্রীষ্মে কাজিনদের সঙ্গে তাস খেলতে গিয়ে ডাচ তরুণী ইন্ডি মেলিঙ্কের মনে প্রশ্ন জাগে, তাস কার্ডে রানির চেয়ে রাজার কদর বেশি কেন? তাসের কার্ডেও লিঙ্গবৈষম্য, নারীর চেয়ে পুরুষ এগিয়ে! শত বছরের লিঙ্গবৈষ্যমের নিয়ম ভেঙে ফেলার সময় এসেছে বলে মনে করেন ফরেনসিক মনোবিজ্ঞানের ২৩ বছর বয়সি শিক্ষার্থী। লন্ডনের ডেইলি মেইল পত্রিকা সম্প্রতি এ খবর জানায়।

‘তাসে নারী-পুরুষের এই সূক্ষ্ম বৈষম্যও সাধারণ মানুষের জীবনকে প্রতিদিন প্রভাবিত করতে পারে। তাস খেলায়ও বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে, নারীর স্থান পুরুষের নিচে, নারী পুরুষের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। লিঙ্গবৈষম্যের ক্ষেত্রে এ ধরনের ছোট বিষয়ও অনেক সময় বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।’ এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মেলিঙ্ক ইন্ডি। তিনি অনেক চিন্তাভাবনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর লিঙ্গবৈষম্যহীন এমন এক কার্ডের ডিজাইন করেন যাতে বসানো হয়েছে রাজা, রানি আর জ্যাকের ছবির পরিবর্তে সোনা, রূপা এবং ব্রোঞ্জের ছবি। এতে তাসের কার্ড থেকে সরে গেছে নারী-পুরুষের বৈষম্য।

মেলিঙ্ক ইন্ডির ডিজাইন করা প্রথম ৫০টি কার্ড বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজন নিয়েছেন। পরে অনলাইনে বিক্রি শুরু করার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম এবং অ্যামেরিকায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্যাকেট বিক্রি হয়ে যায়। তা ছাড়া গেম শপগুলোও এরই মধ্যে লিঙ্গ নিরপেক্ষ তাস নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানান তিনি।

মেলিঙ্কের ডিজাইন করা তাসের মাধ্যমে লিঙ্গবৈষম্যের ব্যাপারে তাসপ্রেমীরা সচেতন হয়ে ওঠবেন বলে আশা করা করা হচ্ছে। ডাচ তাস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান বেরিট ফন ডবেনবার্গ নতুন কার্ড নিয়ে খেলতে গিয়ে মন্তব্য করেন, ‘লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে আমরা এখন ভাবছি, যা একটি ভালো দিক। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এর পরিবর্তন করা কঠিন হবে। এর জন্য তাস খেলার নিয়মে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হবে। তবে আমি সব সময়ই লিঙ্গ নিরপেক্ষতার পক্ষে, আমি খুবই আনন্দিত যে, এই প্রজন্মের একজন তাসে বৈষম্যের বিষয়টি লক্ষ্য করেছে।’

"