আব্দুর রহমান রাসেল, রংপুর

  ০৫ আগস্ট, ২০২২

পরিশ্রমকেই গুরুত্ব দিতে হবে: নাহিন

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

একজন কৃষক রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে চাষ করেন বলেই হাসিমুখে ফসল উত্তোলন করেন। কিছু মানুষ বিশ্বাস করে, প্রতিভা বা ভাগ্যের দ্বারা অসাধ্য সাধন করা যায়। কিন্তু পৃথিবীতে যারা কীর্তিমান, তারা প্রতিভার চেয়ে কঠোর পরিশ্রমকেই গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি। যেমনটি ছিল রংপুর সিটি করপোরেশনের ৬নং ওয়ার্ডের বুড়িরহাট কোবারু গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মশিয়ার রহমান (নাহিন)।

স্কুল জীবন থেকে যুব উন্নয়ন ও মৎস্য সেক্টরের সাথে যুক্ত হওয়ার প্রবল ইচ্ছা ছিল এবং স্কুল জীবন থেকেই লেখা পড়ার পাশাপাশি যুব প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ চাষ কার্যক্রম চালিয়ে যেতেন।

মাত্র ৮ (আট) শতাংশ জায়গার মধ্যে ছোট একটি পুকুরে মাছ চাষ কার্যক্রম শুরু করেন। তারপর রংপুর সদর উপজেলার মৎস্য অফিস থেকে বাটা মাছের সাথে রুই জাতীয় মাছ চাষের একটি প্রদর্শনী পেয়েছিলেন। এরপর নিজের চেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা এমন একটি সেক্টরের সাথে যুক্ত হয়েছেন, সেক্টরটি দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পুরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে।

মশিয়ার রহমান (নাহিন) বলেন, হ্যাঁ আমি যুব উন্নয়ন ও মৎস্য সেক্টরের কথা বলছি। বর্তমানে কৃষিবান্ধব সরকারের যথাযথ দিক নির্দেশনায় যুব উন্নয়ন ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে বাংলাদেশ আজ মাছ উৎপাদনে বিশ্বে ৪র্থ স্থান অধিকার করেছে।

মাত্র ৮ শতাংশ পুকুরে যে পরিমাণ মাছ উৎপাদন হয়েছিল তা দেখে আমি মাছ চাষে আরও বেশি আগ্রহী হই। পরবর্তী সময়ে ২০০১-২০০২ সালে আমি ০৫ (পাঁচ) টি পুকুর ইজারা নেই। যার আয়তন ছিল ৬.০ একর এবং সেখানে যুব উন্নয়ন ও মৎস্য অফিসের সহযোগীতায় বাণিজ্যিক আকারে মাছ চাষ শুরু করি। পর্যায়ক্রমে মাছ চাষ কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করতে থাকি। ইতিমধ্যে যুব উন্নয়ন ও মৎস্য অফিস থেকে আমি অনেক প্রশিক্ষণ পাই এবং ভালো মানের পোনা তৈরির জন্য মাছের নার্সারি কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হই। এতে করে আমার মাছের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পায়। আমি মৎস্য অফিসের একজন তালিকাভুক্ত পোনা উৎপাদনকারী। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনকৃত রেনু, পোনা ও মাছ, মুরগি, গবাদি পশুর খাদ্য এবং ডিম দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিক্রয় করে থাকি। বর্তমানে আমার ব্যবসার পুঁজি প্রায় এক কোটি টাকা। আমার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫৫ জন নারী পুরুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এছাড়া আমি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত আছি।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ এবং অন্যান্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন পর্যায়ে পরিদর্শন করে ভুঁয়সী প্রশংসা করেছেন। আমার সাফল্য দেখে অনেকে এখন আমার প্রতিষ্ঠানের মতো উদ্যোক্তা হতে চান এবং স্বপ্রণোদিত হয়ে তারা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ গ্রহণে ও আত্মকর্মসংস্থানের প্রকল্প গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠেন। এভাবে মৎস্য অফিসের সহায়তায় ও পরামর্শে আমি মাত্র ০৮ (আট) শতকের পুকুর থেকে বর্তমানে একজন মৎস্য হ্যাচারি, ডেইরি, পোলট্রি ফার্ম এবং নাহিন এগ্রো ফিল্ড মিল লিঃ এর মালিক হয়েছি। আমি সকলের দোয়া প্রার্থী। ভাই বোনদেরকে কৃষি সেক্টরে সম্পৃক্ত হয়ে দেশের উন্নয়নশীল কাজে অংশ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। আজ আমি নিজেকে একজন সাফল্য আত্মকর্মী পুরুষ উদ্যোক্তা হিসেবে মনে করি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পরিশ্রম,নাহিন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close