নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ নভেম্বর, ২০২২

কাগজের বাজার স্বাভাবিক করতে পাঁচ দফা সুপরিশ

ছবি : সংগৃহীত

দেশে মিল মালিক ও কাগজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে দেশজুড়ে কাগজের সংকট দেখা দিয়েছে বলে । দ্রুত এ সিন্ডিকেট দমন করে বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাগজ আমদানি করতে হবে। তা না হলে আগামী বছর নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। একুশে বইমেলাসহ শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থবিরতা তৈরি হবে। শিক্ষার্থীরা লেখার কাগজ পাবে না। এমনকি ডায়েরি-ক্যালেন্ডার ও কাগজের ব্যাগ তৈরির কাজও থমকে যাবে। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নেতারা এ বক্তব্য তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের বাজারে মুদ্রণ ও লেখার কাগজের সংকট তৈরি হয়েছে। একটি সিন্ডিকেট চক্র এ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কাগজের যে আকাশচুম্বী মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে, তা স্বাধীন বাংলাদেশে অতীতের যে কোনো সময়কে ছাড়িয়ে গেছে। এটি ভয়াবহভাবে আকার ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী বছরের কোটি কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিঘ্ন ঘটবে, তেমনি ২০২৩ সালে অমর একুশে বইমেলায় বইয়ের দাম বেড়ে যাবে, প্রকাশকরা নতুন বই প্রকাশ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।

আরিফ হোসেন বলেন, বিশ্ববাজারে কাগজ তৈরির কাঁচামাল পাল্প ও পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। যে পরিমাণ বেড়েছে তার চেয়ে দুই থেকে আড়াই গুণ বেশি দাম দেশের কাগজ মিলগুলো আদায় করছে। এতে দেশের শিক্ষা ও প্রকাশনা শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপাতে গিয়ে সরকার বর্তমানে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে।

দাম বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, ২০২১ সালে ৮০ গ্রাম অফসেট এক রিম কাগজের মূল্য এক হাজার ৫০০ টাকা হলেও বর্তমানে দাম বেড়ে তা তিন হাজার টাকা হয়েছে। একশ গ্রামের একই কাগজ এক হাজার ৭৫০ থেকে চার হাজার ২০০ টাকা দাঁড়িয়েছে। ২০ বাই ৩০ ইঞ্চি নিউজপ্রিন্ট কাগজের রিম ৩৮০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা হয়েছে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে কোনো দুষ্টচক্রের ইন্ধন রয়েছে কি না তা সরকারকে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানানো হয়।

কাগজের বাজার স্বাভাবিক করতে তারা পাঁচ দফা সুপরিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো- অস্বাভাবিক কাগজের দাম বৃদ্ধির কারণ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, দ্রুততম সময়ে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানিতে শুল্কমুক্ত ঘোষণা, দেশে সব ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কাগজ রিসাইকেলিং কাজে ব্যবহার করার ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর গুদামজাতকৃত কাগজ স্বাভাবিক মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা ও শুল্ক হ্রাস বা মুক্ত করা ছাড়াও অন্যবিধ কী ভর্তুকি বা প্রণোদনামূলক ছাড় দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাজহারুল ইসলাম, মোজবাহ উদ্দিন আহমেদ, মির্জা আলী আশরাফ কাসেম, জ্ঞান ও সৃজনশীল পুস্তুক প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি ওসমান গণি, সাবেক সভাপতি আমলগীর সিকদার লোটন প্রমুখ।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কাগজ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close