reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ মে, ২০২২

তীব্র যানজটে সীমাহীন দুর্ভোগ নগরবাসীর

ছবি : সংগৃহীত

সময় যত গড়াচ্ছে রাজধানীতে যানজটের তীব্রতা ততটাই ভয়াবহ আকারে রূপ নিচ্ছে। এক থেকে দেড় কিলোমিটার সড়ক যেতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে। এ অবস্থায় গণপরিবহন থেকে নেমে অনেকেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে ছুটতে দেখা গেছে। কোনো কোনো সড়কে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ফিরে যাচ্ছে গাড়ি।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সকাল থেকেই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক, খিলক্ষেত, বনানী, বাড্ডা, গুলশান, মহাখালী, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজারে দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে। এতে ওইসব সড়কে চলাচলকারী লোকজনকে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। এসব সড়কের যানজট আশপাশের অলিগলিতেও জটলা তৈরি করেছে।

রাজধানীর বাড্ডা থেকে ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আবদুর রহমান মাসুম জানান, মালিবাগের আবুল হোটেল থেকে মধ্যবাড্ডা পর্যন্ত সড়কের দুইপাশেই যানজট রয়েছে। অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ভ্যাপসা গরম ও যানজটে ঘেমে তাদের জীবন অতিষ্ঠ। যানজটের কারণে সদরঘাট এবং যাত্রাবাড়ী থেকে গাজীপুর-আব্দুল্লাপুর-টঙ্গী রুটের অনেক বাস যাত্রী নামিয়ে ঘুরে সদরঘাট ও যাত্রাবাড়ীর দিকে ফিরে যাচ্ছে।

ফাইয়াজ বিন সাজ্জাদ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলেন, আমার অফিস বনানীতে। খিলক্ষেত থেকে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে অফিসের উদ্দেশে রওনা হই। প্রতিদিন সাড়ে ৯টা থেকে পৌনে ১০টার মধ্যে অফিসে পৌঁছাই। তবে আজ ৯টা ৪৫ মিনিটে ছিলাম কুড়িল বিশ্বরোডে। প্রায় ১৫ মিনিটের মতো পায়ে হেঁটে বেলা সোয়া ১১টায় অফিসে পৌঁছেছি।

মালিবাগ থেকে গুলশানে অফিসের উদ্দেশে বের হয়েছেন শারমিন সুলতানা পান্না। তিনি বলেন, মালিবাগে নিজের বাসার নিচেই বাসে ৪০ মিনিট ধরে বসে আছি। গাড়ির চাকা ঘুরছে না।

শান্তা ইসলাম নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জানান, বাসে ৩ ঘণ্টায় তিনি বিমানবন্দর থেকে বনানী এসেছেন।

মো. ফয়সাল আহসান নামে আরেক যাত্রী জানান, রামপুরা থেকে লিংক রোড, উওর বাড্ডা হয়ে গুলশান ১ নম্বরের রাস্তাগুলোতে যানচলাচল প্রায় বন্ধ। গরমে ট্রাফিক জ্যামে আটকে আছি দেড় ঘণ্টা। কখন পৌঁছাতে পারব এখনো নিশ্চিত নই। এতো গরমে হেঁটে ২/৩ কিলোমিটার যাওয়াও সম্ভব না।

ট্রাফিক পুলিশ বলছে, ঢাকার এই সড়কগুলোতে প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও বুধবার চাপ বাড়ে। আর বৃহস্পতিবার চাপ থাকে পুরান ঢাকার দিকে। তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হঠাৎ গাড়ির চাপ বেড়েছে। এছাড়া বিজয় সরণিতে একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে উল্টে যাওয়ায় উভয়পাশের সড়কে যানচলাচল বন্ধ ছিল। প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় পরিস্থিতি এমন হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিকের গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. ইমরান হোসেন বলেন, ভোরে বিজয় সরণিতে কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ার ঘটনার কারণে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় ভ্যানটি রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানতে পেরেছি। দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকার কারণে মহাখালী হয়ে প্রভাব পড়ছে বাড্ডায়। আর বাড্ডায় গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় যানজট ছড়িয়ে পড়েছে রামপুরা থেকে কুড়িল পর্যন্ত।

রাজধানীর বিজয় স্মরণীতে দুর্ঘটনাকবলিত একটি গাড়িকে যানজটের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ট্রাফিক) গুলশান-মহাখালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আশফাক আহমেদ। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণে দীর্ঘক্ষণ গাড়ি বন্ধ থাকার পর যান চলাচল শুরু হয়। একসঙ্গে সব গাড়ির চাপ পড়ায় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মহাখালী থেকে এই যানজট খিলক্ষেত পর্যন্ত ছড়িয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাজধানী,যানজট,নগরবাসী,দুর্ভোগ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close