নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নতুন রোগ ‘হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ’ আক্রান্ত বেশি শিশুরা      

ফাইল ছবি

কয়েক দিন আগে ছেলের জ্বর হয়। পরে দেখি হাতে, পায়ে ও মুখে র‌্যাশ বের হয়েছে। প্রথমে জলবসন্ত মনে করলেও ছেলেক নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি জানান, এটি হ্যান্ড ফুট মাউথ রোগ।

তবে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, এটি খুব দ্রুত সেরে যাবে। আট দিনের মাথায় ফুসকুড়ি কমে ছেলে সুস্থ হয়ে উঠেছিল। এ রোগ আমাদের এলাকার অনেক শিশুর হয়েছে। খুব ছোঁয়াচে- বলছিলেন রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা মাজহার আলম।

চিকিৎসকরা বলছেন, হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে শহরজুড়ে। ঢাকার অধিকাংশ হাসপাতালে দেখা মিলছে ভাইরাসজনিত রোগটিতে আক্রান্ত রোগীর। অতি সংক্রামক এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মূলত শিশুরা। পাঁচ বছরের কম বয়সিদের মধ্যে আক্রান্তের হার বেশি। অনেকটা জলবসন্তের মতো এ রোগ মাত্রাতিরিক্ত ছোঁয়াচে। তবে আতংকিত হওয়ার মতো কোনো বিষয় নেই।

চিকিৎসকরা আরো বলছেন, এ ভাইরাসে যে কোনো বয়সি মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। তবে বেশি সংক্রমিত হতে দেখা যায় শিশুদের। কক্সাকি ভাইরাসের কারণে এ রোগ হয়। কেউ যদি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যায় এবং তার যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তবে যে কোনো বয়সেই আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত হলে দুই হাতের পাতা, কনুই, দুই পায়ের পাতা, হাঁটুর মালা এবং মুখের ভিতর জলবসন্তের মতো গোটা ওঠে। কিছু কিছু গোটায় পানি জমে। এই রোগ অনেকটা জলবসন্তের মতো হলেও একজনের একাধিকবারও হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ রোগ প্রচণ্ড ছোঁয়াচে। খুব দ্রুত এটি সংক্রমণ ঘটায়। তবে এ রোগ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে যায়। আক্রান্ত হওয়ার ৩ থেকে ৬ দিনের মধ্যে অল্প তাপমাত্রা থেকে ১০২ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর আসতে পারে। এছাড়া গলাব্যথা হতে পারে জ্বর আসার ২-৩ দিনের মধ্যে। হাত ও পায়েও র‌্যাশ দেখা দেবে। হাত, পা ও মুখ আক্রান্ত হওয়ার কারণে এই রোগকে হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ বলে। র‌্যাশগুলো কিছুটা যন্ত্রণাদায়ক হয়, থাকতে পারে চুলকানিও। পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনও হতে পারে। এই রোগ নিয়ে অনেকেই হাসপাতালে আসছেন জানিয়ে পরিচালক বলেন, ১৫ থেকে ২০ শতাংশ রোগী এই সমস্যা নিয়ে আসছে। রোগী বাড়লেও এই রোগের জটিলতা কম। হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন হয় না। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে চলে যায়। তবে অনেক সময় মুখের ভিতরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। তখন বাচ্চা খেতে পারে না। সেক্ষেত্রে একেবারে খাওয়া-দাওয়া করতে না পারলে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করে স্যালাইন দেই। এই রোগে সর্বোচ্চ তিনবার আক্রান্ত রোগীও আমরা পেয়েছি। তাই একবার হলে আবারও হতে পারে। ভয় না পেয়ে সতর্ক থাকা উচিত।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ,শিশু
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close