শীতে গরম খিচুড়ি
শীতে গরম গরম খিচুড়ি কার না ভালো লাগে। সেটা হোক সবজি কিংবা মাংসের তৈরি। সকালে বা বিকেলের নাশতায়, আবার দুপুরে হলেও মন্দ হয় না। উদরপূর্তি করে খাওয়া যায়। এতে পুষ্টিগুণও অটুট থাকবে। খাবারেও পাবেন ভিন্নতা। তাই তো আজ দেওয়া হলো এমন কয়েকটি খিচুড়ির প্রস্তুত প্রণালি।
স্পাইসি ফিশ খিচুড়ি
উপকরণ : পোলাও/বাসমতী চাল ১ কাপ। কোরাল অথবা যেকোনো মাছের কাঁটা ছাড়া ফিলে টুকরা ২ কাপ। মুগডাল ২ টেবল চামচ। মটরশুঁটি হাফ কাপ। পেঁয়াজ কুচি করা ১ কাপ। রসুন কুচি করা ২ চা চামচ। আদা মিহি কুচি ২ চা চামচ। শুকনো মরিচ ফাকি করা ১ চা চামচ (কমবেশি করা যাবে)। হলুদগুঁড়ো ১ চা চামচ। মরিচগুঁড়ো ২ চা চামচ। জিরাগুঁড়ো ১ চা চামচ। আস্ত জিরা হাফ চা চামচ। তেল ২ টেবল চামচ। লবণ পরিমাণমতো। ঘি হাফ চা চামচ (ইচ্ছা) ও ধনিয়া পাতা মিহিকুচি ২ টেবল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি : প্রথমে মাছের ফিলেগুলোকে ২ টেবল চামচ লেবুর রস, হাফ চা চামচ লেবুর মিহি খোসা, অল্প অলিভ অয়েল আর অল্প লবণ দিয়ে মাখিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। একটি পাত্রে চাল আর ডাল একসঙ্গে নিয়ে ধুয়ে আধঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এখন হাঁড়িতে তেল দিয়ে তেল গরম হয়ে এলে এতে আস্ত জিরা দিন, ফুটে উঠলে পেঁয়াজকুচি দিয়ে বাদামি করে ভেজে নিন। এবার আদা মিহিকুচি, রশুনকুচি, শুকনো মরিচ ফাকি, হলুদগুঁড়ো, মরিচগুঁড়ো, জিরাগুঁড়ো, লবণ পরিমাণমতো আর অল্প পানি দিয়ে মসলা কষিয়ে নিন।
এবার ভিজিয়ে রাখা চাল, ডাল, দিয়ে নাড়াচাড়া করে রান্না করুন ৩ থেকে ৪ মিনিট। এখন ২ কাপ গরম পানি, মটরশুঁটি দিয়ে নাড়াচাড়া করে এতে ধনিয়া পাতা মিহিকুচি, মেরিনেট করে রাখা মাছের টুকরাগুলো আলতো করে ছড়িয়ে দিন। ঢাকনা লাগিয়ে মিডিয়াম আঁচে রান্না করুন চাল সিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত, এতেই মাছ সিদ্ধ হয়ে যাবে এবং পানি পরিমাণমতো দিলে খিচুড়ি ঝরঝরে হবে, মনে রাখবেন মাছ দেওয়ার পর নাড়াচাড়া করলে মাছ ভেঙে যাবে। খিচুড়ি হয়ে এলে নামানোর আগে অল্প ঘি ছিটিয়ে দিতে পারেন (না দিলেও হবে)। হয়ে এলে টমেটো, পেঁয়াজ, ধনিয়া পাতা দিয়ে বানানো সালাদের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন সঙ্গে রাখতে পারেন একটা সিদ্ধ ডিমও।
সবজি ভুনা খিচুড়ি
উপকরণ : গোবিন্দ ভোগ চাল ২০০ গ্রাম। মুগের ডাল ২৫০ গ্রাম। টমেটোকুচি ১-২ কাপ। আদাবাটা ২ টেবিল চামচ। ঘি ৫০ গ্রাম। সাদা তেল ৬ টেবল চামচ। কাঁচামরিচ ৬-৭টি। সাদা জিরা ১ চা চামচ। তেজপাতা ২টি, শুকনো মরিচ ২টি। হলুদগুঁড়ো ১ চা চামচ। মরিচগুঁড়ো ১-২ চা চামচ। পানি ৭০০ মিলি লিটার। বড় টুকরো করা আলু ৪টি। ফুলকপি বড় করে কাটা ৮ টুকরো। মটরশুঁটি ১ কাপ। লবণ স্বাদমতো। চিনি ৩ চা চামচ। নারকেলকুচি ১-২ কাপ।
প্রস্তুত প্রণালি : আলু ও কপি লবণ মাখিয়ে সোনালি করে ভেজে তুলুন। একটা কড়াইয়ে তেল ও ঘি মিশিয়ে গরম করুন। চাল ও ভাজা মুগ ডাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার তেল গরম হলে তাতে জিরা, তেজপাতা ও শুকনো মরিচ ফোঁড়ন দিন। ফোঁড়ন হলে তাতে ভিজিয়ে রাখা চাল ও নারকেলকুচি দিয়ে ভালো করে ভাজুন। চাল-ডাল ভাজতে ভাজতেই তার সঙ্গে মেশাতে থাকুন আদাবাটা, হলুদগুঁড়ো, মরিচগুঁড়ো ও টমেটোকুচি। লবণ ও চিনিও দিয়ে দিন।
চাল-ডাল-মসলা যখন বেশ কষানো হয়ে যাবে তখন পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করুন। পানি ফুটে উঠলে তাতে আলু, ফুলকপি, মটরশুঁটি ও কাঁচামরিচ দিয়ে আবার ঢাকনা দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন। মাঝেমধ্যে নেড়ে দেবেন যেন তলায় না লেগে যায়। পানি শুকিয়ে এলে গ্যাস বন্ধ করে দিন ও কড়াইয়ে ঢাকা দিয়ে একটা ভারী কিছু চাপা দিয়ে ২০ মিনিট ভাপে রাখুন। ২০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে পুরো জিনিসটা নাড়াচাড়া করে নিন। এরপর নামিয়ে নিন। ব্যাস হয়ে গেল সবজি ভুনা খিচুড়ি।
গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি
উপকরণ : গরুর মাংস এক কেজি। আদাবাটা এক টেবল চামচ। পোলাওয়ের চাল চার কাপ। রসুনবাটা দুই চা চামচ। মুগডাল এক কাপ। মসুর ডাল এক কাপ। পেঁয়াজবাটা চার টেবল চামচ। গরম মসলার গুঁড়ো দুই চা চামচ। ধনেবাটা এক চা চামচ। এলাচ চারটি। পানি ১০ কাপ। দারুচিনি চার-পাঁচটি। কাঁচামরিচ ছয়-সাতটি। লবণ স্বাদমতো। তেল পরিমাণমতো।
প্রস্তুত প্রণালি : চাল ও ডাল ধুয়ে আধঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। মাংসে তেল ছাড়া বাকি সব উপকরণ দিয়ে মাখাতে হবে। হাঁড়িতে তেল গরম করে মসলা মাখানো মাংস দিয়ে দিন। ভালোমতো কষিয়ে তিন কাপ পানি দিয়ে সিদ্ধ হতে দিন। মসলা থেকে মাংস তুলে অন্য পাত্রে রাখুন। মসলায় পানি ঝরানো চাল ও ডাল কষিয়ে ১০ কাপ পানি দিয়ে ঢেকে দিন। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচামরিচ ও মাংস দিয়ে নেড়ে রাখুন। শেষে সালাদ বা আচার দিয়ে পরিবেশন করুন।
পিডিএসও/তাজ