ধর্মপাশা প্রতিনিধি

  ০৫ জুলাই, ২০২০

ধর্মপাশায় খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশঙ্কা

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগর এই দুটি সরকারি খাদ্যগুদামে ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে ধীর গতিতে। এই দুটি গুদামে বরাদ্দ পাওয়া ৫১১১টনের মধ্যে গত দেড় মাসে সংগ্রহ করা হয়েছে মাত্র ৭০৫টন। হাটবাজার গুলোতে কৃষকরা ধানের ভালো দাম পাওয়ায় খাদ্যগুদামে ধান নিয়ে আসতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এতে করে ধান সংগ্রহ কার্যক্রমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধ্যনগর খাদ্যগুদামে দুই হাজার ৬০২টন ও ধর্মপাশা খাদ্যগুদামে দুই হাজার ৫০৯টন ধান সংগ্রহ করার সিদ্ধাস্ত হয়। প্রতি কেজি ধান ২৬টাকা ও প্রতিমণ ধান এক হাজার ৪০টাকা দামে উন্মুক্ত লটারিতে বিজয়ী তালিকাভুক্ত প্রত্যেক কৃষক সর্বোচ্চ একটন করে ধান বিক্রি করতে পারবেন।

এদিকে চলতি বছরের ২০মে থেকে ওই দুটি খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহ শুরু হয় এবং তা চলবে ৩১আগস্ট পর্যস্ত। শনিবার পর্যন্ত উপজেলার মধ্যনগর খাদ্যগুদামে ৫৫৫ টন ও ধর্মপাশা খাদ্যগুদামে ১৫০টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।

উপজেলার মধ্যনগর বাজারের বাসিন্দা কৃষক আলাল উদ্দিন বলেন, এক রোদে ধান শুকিয়ে বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিমণ ধান ৯৪০থেকে ৯৬৫টাকা দামে কৃষকরা সহজেই বিক্রি করতে পারছে। খাদ্যগুদামে এই ধান বিক্রি করতে হলে তিনবার রোদে শুকাতে হতো। গুদামে ধান নিয়ে গেলে শ্রমিক খরচসহ আরও নানাদিক দেখতে হয়। বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় গুদামে ধান বিক্রিতে এখানকার কৃষকদের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

উপজেলার মধ্যনগর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মধ্যনগর ধান-চাল আড়ত কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জহিরুল হক বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় খোলাবাজারে এবার ধানের দাম ভাল। তাছাড়া বাজারে চালের দামও কিছুটা বেশি। ফলে কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি না করে তা হাট-বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে।

ধর্মপাশা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) সুজন রায় ও মধ্যনগর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) অবিনাশ দাস বলেন, এ উপজেলার হাটবাজার গুলোতে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এই দুটি খাদ্যগুদামে সরকারি নির্ধারিত মুল্যে ধান বিক্রি করা নিয়ে তাদের আগ্রহ নেই। এ অবস্থায় ধান সংগ্রহের লক্ষমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমরা সবরকম চেষ্ঠা করছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

ধর্মপাশা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা তাহিরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিএম মুশফিকুর রহমান বলেন, হাটবাজার গুলোতে তুলনামুলক ধানের দাম কিছুটা বেশি। পরিবহন খরচ বেশি হওয়ার কারণে একটন করে ধান গুদামে নিয়ে আসার জন্য কৃষকেরা তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তাই সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের মৌখিক নির্দেশে তালিকাভুক্ত প্রত্যক কৃষক সর্বোচ্চ তিনটন করে ধান গুদামে বিক্রি করতে পারবেন। ১জুলাই থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। এ অবস্থায় ধান সংগ্রহের গতি ফিরে আসবে বলে আশা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান বলেন, লটারিতে বিজয়ী তালিকাভুক্ত প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে ধান ক্রয় করে এ উপজেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই এ নিয়ে সভা ডাকা হবে।

পিডিএসও/এসএম শামীম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ধর্মপাশা,খাদ্যগুদাম
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close