নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ অক্টোবর, ২০১৮

অলিগলিতে ইলিশ, সবজির দাম বাড়তি

অন্য যেকোনো মাছের চেয়ে ইলিশ সবার কাছেই প্রিয়। তাই তো সব সময় ইলিশের প্রতি মানুষের থাকে বিশেষ আকর্ষণ। কিন্তু দামের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সব সময় অনেকেই ইলিশ কিনতে পারেন না। প্রতিবছরই সেপ্টেম্বরের শেষ এবং অক্টোবরের প্রথমদিকে বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেশি থাকে। তাই দামও তুলনামূলক কম থাকে। ফলে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ কম-বেশি ইলিশের স্বাদ নিতে পারেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

রাজধানীর মাছের বাজারগুলো এখন অনেকটাই ইলিশের দখলে। শুধু কি মাছবাজার? বিভিন্ন মহল্লার অলি-গলিতেও এখন ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসেছেন খন্ডকালীন ব্যবসায়ীরা। বাজারের চেয়ে তুলনামূলক কম দামেই এসব মহল্লার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইলিশ কিনতে পারছেন ক্রেতারা।

তবে মাছবাজার কিংবা মহল্লার ব্যবসায়ী সবখানেই এখন ইলিশের দাম নিম্ন-মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্য। এ ছাড়া পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও বাড়তির দিকে সবজির দাম। শীতকালীন সবজি শিম, ফুলকপি ও বাঁধাকপি দাম বেড়েছে একটু বেশিই। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল ও বাজার ভেদে এককেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে-১ হাজার ৫০০ টাকা পিস। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৬৫০-৮০০ টাকা পিস। ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশ মিলছে ৩০০-৪০০ টাকার মধ্যে। আর ৫০০ গ্রামের নিচের ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৪০০-৫৫০ টাকা কেজি।

অবশ্য কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৭০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশও কেজি দরে বিক্রি করছেন। কেজি দরে তেজগাঁওয়ের নাখাল পাড়ায় ইলিশ বিক্রি করা মো. রবিউল বলেন, আমরা ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি করছি ৭০০ টাকা কেজি। আর ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৬০০ টাকা।

ইলিশের দাম এখন কম না বেশি? এমন প্রশ্ন করলে এই ব্যবসায়ী বলেন, আমি ১০-১২ দিন ধরে ইলিশ বিক্রি করছি। এক সপ্তাহ আগের তুলনায় এখন ইলিশের দাম কিছুটা কম। এখন যে ইলিশ ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি কিছুদিন আগেও তা ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি।

এদিকে, কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায় সেখানে এককেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১০০০-১২০০ টাকা পিস। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০০-৭০০ টাকা পিস। আর ৫০০ গ্রামের নিচের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৪৫০-৫৫০ টাকা কেজি।

বাজারটির ব্যবসায়ী সুকুমার বলেন, আর মাত্র দুদিন পরেই ইলিশ ধরা ও বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে। শেষ সময়ে এসে বাজারে এখন ইলিশের চাহিদা কিছুটা হলেও বেড়েছে। তবে চাহিদা বাড়লেও দাম বাড়েনি। ৮০০-৯০০ গ্রামের একটা ইলিশ ক্রেতারা ৬০০-৬৫০ টাকার মধ্য কিনতে পারছেন। কয়েক মাস আগে এই সাইজের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা পিস।

এই ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে এখন ৭০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের সরবরাহ এবং চাহিদা বেশি। ছোট ইলিশের দাম এবং চাহিদা তুলনামূলক অনেক কম।

বাজারে ইলিশের সরবরাহ থাকায় অন্য মাছের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে রুই মাছ প্রতিকেজি ২২০-২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০, পাঙ্গাস ১২০, পাবদা ৪০০, শিং আকার বেদে ৫০০-৬০০, চিংড়ি ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে, কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, শীতকালীন সবজির মধ্যে শিম, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজরসহ প্রায় সবজির দাম বেড়েছে। বাজারে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা, বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৬০-৭০, টমেটো ৯০, শসা বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০, বেগুন ৫০, কঢ়ুরমুখী ৫০, গাজর ৮০, ঝিঙা ৫০, করলা ৫০ টাকা, কাকরোল ৫০, লাউ প্রতিপিস ৪০-৬০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতিপিস ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে বাজারে শাকের দাম কিছুটা কমেছে। কলমি ও লাল শাক প্রতি আটি ৮-১০ টাকা, লাউ শাক ২৫ থেকে ৩৫, পালং শাক ১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে ডাল, তেল ও মসলার দাম। প্রতিকেজি মসুর ডাল (দেশি) ১০০ টাকা, মোটা ৭০, মুগ ডাল ১২০ টাকা, ভোজ্যতেল প্রতিলিটার খোলা ৯০ টাকা, বোতল ১০৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা ১০০-১২০ টাকা, রসুন (বিদেশি) ৮০ টাকা, দেশি ৭০ টাকা, পেঁয়াজ (দেশি) ৪৫-৫০ টাকা, পেঁয়াজ (বিদেশি) ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

তবে বেড়েছে সব ধরনের ডিম ও মাংসের দাম। হাঁসের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি করতে দেখা গেছে, ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৮০ টাকা, ব্রয়লার ১০৫ টাকা। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে দেখা গেছে, ১৪০-১৫০ টাকা, লেয়ার ২৫০-২৬০ টাকা। এ ছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০-৫০০ টাকা কেজি।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাজারদর,সবজির দাম,ইলিশ,কাঁচা বাজার
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close