নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ জুলাই, ২০১৮

কাঁচামরিচের কেজি ২০০ টাকা : স্থিতিশীল সবজির বাজার

রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে গত কয়েক দিনে কাঁচামরিচের দাম কয়েক দফা বেড়েছে। সপ্তাহখানেক আগে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচামরিচের দাম ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। ক্রেতারা বলছেন, সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে।

অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকায় যে পরিমাণ কাঁচামরিচ এসেছে, তা প্রতিদিনের চাহিদার তুলনায় অনেক কম। চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতির কারণে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া বাজারে সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিংগা, বেগুন, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে ও করলাসহ প্রায় সব সবজিই বাজারে ভরপুর। যে কারণে বেশির ভাগ সবজিই ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচামরিচের দামে যেন আগুন লেগেছে। সবজি বিক্রেতা আবদুস সোবহান বলেন, গত কয়েক দিনে কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে। সরবরাহ কম। বর্ষার পানি উঠে গেছে বেশির ভাগ জমিতে। এ জন্য দাম বেড়েছে। আমরা বেশি দামে পাইকারি বাজার থেকে কিনছি, তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। সবজি কিনতে এসেছেন আবুল বাশার। তিনি বলেন, সিজন শেষে দাম একটু বাড়তে পারে। তাই বলে সিজনের ৫০ থেকে ৬০ টাকার কাঁচামরিচের দাম এখনই ২০০ টাকা হবে!

তাহলে সারা বছর কাঁচামরিচের দাম কত হবে? তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিটি সবজি বিক্রেতার দোকানেই যথেষ্ট পরিমাণ কাঁচামরিচের মজুদ আছে। এমনিতেই ৬০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি মেলে না। তার ওপর কাঁচামরিচের দাম এত বেশি। বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে কাঁচামরিচের দাম বাড়িয়েছেন।

এদিকে বাজারে প্রতি কেজি চিচিংগা বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহেও একই ছিল। বেগুনও আগের সপ্তাহের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে ঝিঙা, ধুন্দল, পটল, কাঁকরোল ও করলা। ঝিঙা ও ধুন্দল আগের সপ্তাহের মতোই ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স ও করলা।

আর রোজার মধ্যে বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হওয়া কাঁকরোল ও পেঁপের দাম গত সপ্তাহে বেশ কমে যায়। রোজার সময় ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া কাঁকরোলের দাম কমে দাঁড়ায় ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। আর ৭০ থেক ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পেঁপের দাম কমে দাঁড়ায় ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। চলতি সপ্তাহেও এ সবজি দুটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বরবটিও। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে ৪ থেকে ৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

সবজির পাশাপাশি স্থিতিশীল রয়েছে শাকের দাম। লাল শাক, সবুজ ডাটা শাক, পাটশাক, কলমিশাক আগের সপ্তাহের মতো ১০ থেকে ১৫ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে। পুঁইশাক ও লাউ শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা করে। দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে পেঁয়াজও। দেশি পেঁয়াজ বাজার ও মান ভেদে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহেও পেঁয়াজের দাম এমনই ছিল। একই অবস্থা মাছ বাজারেও।

বাজারে প্রতি কেজি মাঝারি সাইজের ইলিশ ৬০০, বড় ইলিশ ১ হাজার ৮০০, ছোট আইড় ৮০০, বড় আইড় ১ হাজার ১০০, বড় চিংড়ি ১ হাজার, গুড়া চিংড়ি ৫০০, রুই ৬০০, বেলে ৭০০, পাবদা ৫০০, বাটা ১৬০, সরপুঁটি ১৬০, ছোট সুরমা ২৬০, বড় সুরমা ৩৫০, ছোট কই ১৮০, বড় কই ২০০, ছোট শৈল ৪৫০, বড় শৈল ৮০০ ও মাগুর মাছ ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে সবজির বাজার স্থিতিশীল থাকলেও মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি দুই থেকে তিন টাকা। আর পোলাও চালের দাম বেড়েছে অন্তত পাঁচ টাকা। মিনিকেট সপ্তাহ শেষে তিন টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৬ টাকা, স্বর্ণা ৪০ থেকে বেড়ে ৪২ টাকা, ২৮ নম্বর হিসেবে পরিচিত চাল তিন টাকা বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর চিনিগুঁড়া চাল বিক্রি করছেন ৯০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৮৫ টাকা। তবে ব্রয়লার মুরগি ও মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গরুর মাংস ৫০০ ও খাসির মাংস ৭২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কাঁচামরিচ,সবজির বাজার,কাঁচাবাজার,খুচরা বাজার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist