নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৯ মে, ২০১৮

সঞ্চয়পত্র কেনায় হিড়িক

শেয়ারবাজারে রয়েছে কিছুটা আস্থার অভাব। অন্যদিকে ব্যাংকের তুলনায় সঞ্চয়পত্রে মুনাফাও বেশি। এই অবস্থায় বিনিয়োগের নিরাপদ জায়গা হিসেবে সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা। এক ধরনের সঞ্চয়পত্র কেনায় হিড়িকই পড়েছে। এদিকে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য দীর্ঘলাইনে অপেক্ষা করছেন বিনিয়োগকারীরা। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে ফরম সংগ্রহ ও জমা দিতে দেখা গেছে গ্রাকহদের।

সঞ্চয়পত্র কিনতে আসা লাইলী নূর এ বিষয়ে বলেন, কিছু টাকা ব্যাংকে রয়েছে। সেখান থেকে ইন্টারেস্ট পাওয়া যায় প্রায় ৬ শতাংশ। বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ পড়ে। এর চেয়ে সঞ্চয়পত্রে সুদ অনেক বেশি। তাই সঞ্চয়পত্র কিনতে এসেছি। আর বেশ কিছুদিন ধরেই সঞ্চয়পত্র কিনব বলে ঠিক করে রেখেছি। তাছাড়া হঠাৎ গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, সরকার সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমাবে। এখন সঞ্চয়পত্র কিনলে বর্তমানের রেটেই সুদ পাওয়া যাবে। তাই সঞ্চয়পত্র কিনে রাখছি।

এদিকে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও জানিয়েছেন, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর বিষয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। বাজারের ঋণের সুদের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের ঋণের ফারাকটা একটু বেশি হয়ে গেছে। তাই এটাকে রিভিউ করতে হবে। কিন্তু এর সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি যুক্ত তা বিবেচনায় নিয়েই এটাক রিভিউ করা হবে। তবে বিভিন্ন মহল থেকে সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমাতে বলা হলেও এবার বাজেটে না কমানোর সম্ভাবনায় বেশি। কারণ সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই আসছে বাজেটে কোনো নেতিবাচক বিষয় রাখতে চাইবে না সরকার। জানা যায়, সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বর্তমানে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সরকার চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১২ মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে। কিন্তু অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সব ধরনের সঞ্চয়পত্রসহ জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোতে নিট ঋণ এসেছে ৩৬ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। যা গোটা অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ১২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোতে মোট বিনিয়োগ এসেছে ৬০ হাজার ১২৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে থেকে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের মূল ও মুনাফা পরিশোধে সরকারের ব্যয় হয়েছে ২৩ হাজার ৪১৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। তার মধ্যে কেবল মুনাফা পরিশোধেই ব্যয় হয়েছে ১৪ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা। মূল ও মুনাফা বাদ দিয়ে এ খাত থেকে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩৬ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। উল্লেখিত ৯ মাসে সঞ্চয় স্কিমগুলোর মধ্যে বরাবরের মতো সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে পরিবার সঞ্চয়পত্র থেকে। এ খাতে গত ৯ মাসে নিট ঋণ এসেছে ১৩ হাজার ১২০ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, নিট ঋণ ১০ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে নিট ঋণ এসেছে ৩ হাজার ১০৮ কোটি টাকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist