তারুণ্য ডেস্ক

  ২৬ এপ্রিল, ২০১৭

তরুণদের নতুন কর্মক্ষেত্র আউটসোর্সিং

অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের কাজ করিয়ে নেয়। কর্মী নিয়োগ না করে অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করানোকে বলে আউটসোর্সিং। যারা একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বা একটি নির্দিষ্ট পেশায় নিয়োজিত না থেকে নিজের দক্ষতা ও পছন্দ অনুযায়ী অনলাইনে অন্যের কাজ করে দেন, তাদের বলা হয় ফ্রিল্যান্সার। তবে আউটসোর্সিং বলতে অনেকেই শুধু ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিকস ডিজাইন বা ডাটা এন্ট্রির কাজ বুঝে থাকেন। জেনে নিন আউটসোর্সিংয়ের বিস্তারিত-

ডাটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন : তথ্য সংগ্রহ করে তা ছবি, গ্রাফ, চার্ট আকারে উপস্থাপনই ডাটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন। সহজভাবে তথ্যকে তুলে ধরা, মূল বিষয়বস্তু সংক্ষেপে উপস্থাপনের জন্য ডাটা ভিজ্যুয়ালাইজেশনের কাজ করা হয়। এ কাজের জন্য এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অডিও ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট, ইউআই বা ইউএক্স ডিজাইন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।

কার্টোগ্রাফি অ্যান্ড ম্যাপস : অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আছে বিভিন্ন স্থান বা স্থাপনার ভূপ্রাকৃতিক অবস্থান, দেশ বা অঞ্চলের মানচিত্র তৈরির কাজ। অ্যাপ তৈরি, জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস), প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা চিহ্নিত করা, নির্দিষ্ট এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা প্রদর্শনের জন্য কার্টোগ্রাফি অ্যান্ড ম্যাপস কাজের চাহিদা রয়েছে।

ডাটা মাইনিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট : বিশাল তথ্যভা-ার, সার্চ ইঞ্জিন ও ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বা প্রদত্ত তথ্যকে এমনভাবে সাজাতে হয় যেন তা থেকে সহজেই মূল বা দরকারি তথ্য খুঁজে বের করা যায়। বিভিন্ন গাণিতিক পদ্ধতি, ডাটা মাইনিং সফটওয়্যার (যেমন-ওরাকল, অরেঞ্জ, ওয়েকা) ব্যবহার করে উপাত্তগুলোকে সহজ তথ্যে রূপান্তর করা যায়। ডাটা মাইনিং সফটওয়্যার ও প্রোগ্রামের ব্যবহার, ইন্টারনেট রিসার্চ, ডাটা এন্ট্রিতে দক্ষ হলে এ কাজ করা যায়।

লোগো ও স্টিকার ডিজাইন : বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে স্টিকার ডিজাইন করে। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে লোগো ডিজাইন কাজেরও প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী সাইজ, রেজল্যুশন, ফরম্যাট (যেমন-জেপিজি, পিএনজি, জিআইএফ বা পিএসডি) ঠিক রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার মূল বিষয়বস্তু বা উদ্দেশ্য যেন লোগো ও স্টিকারে প্রতিফলিত হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। ছবি আঁকা, ফটোশপ বা ইলাস্ট্রেটরে কাজের প্রতি যাদের আগ্রহ আছে বা সময় পেলেই নকশা করতে পছন্দ করেন, স্টিকার ডিজাইনের ক্ষেত্রে তারা বেশ ভালো করতে পারবেন।

কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স অ্যান্ড টেস্টিং : ওয়েবসাইটের কোয়ালিটি, সফটওয়্যার বা মোবাইল অ্যাপের কোডিং, ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন যাচাই, ভিডিও রেজল্যুশন, অডিও কোয়ালিটি যাচাইয়ের কাজ করা যেতে পারে। গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব প্রোগ্রামিং বা অন্য কোনো ক্ষেত্রে ত্রুটি খুঁজে বের করার দক্ষতা এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা সংগ্রহ ও গবেষণায় আগ্রহ থাকলে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স অ্যান্ড টেস্টিংয়ের কাজ করতে পারেন।

ডাটা সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানালাইসিস : সংগৃহীত অগোছালো তথ্যকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজানো, তথ্যভা-ার থেকে নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা, মার্কেট রিসার্চ, ইন্টারনেট থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা এবং তা প্রোগ্রামিং, পরিসংখ্যান বা গাণিতিক উপায়ে সহজভাবে সাজানোর কাজ করা যেতে পারে।

ট্রাভেল রাইটিং : ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ট্রাভেল রাইটিং অনেকের কাছেই পছন্দের কাজ হতে পারে। ঐতিহ্যবাহী স্থান, খাবার, ভ্রমণ টিপস, থাকা-খাওয়াসহ যাতায়াতের তথ্য থাকে এ ধরনের লেখায়। ট্রাভেল এজেন্সি, হোটেল, ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ওয়েবসাইট, ব্রুশিউর তৈরির মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে ট্রাভেল রাইটিংয়ের বিজ্ঞাপন দেয় অনলাইন মার্কেটপ্লেসে। ইন্টারনেট থেকে নির্দিষ্ট স্থানের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে লেখার কাজও পাওয়া যায়। লেখার জন্য অবশ্যই ইংরেজিতে দক্ষতা ও আকর্ষণীয়ভাবে কোনো বিষয়কে তুলে ধরার গুণ থাকতে হবে।

মেডিক্যাল ট্রান্সলেশন : চিকিৎসা, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন আর্টিকেল তৈরি, ওষুধের গুণাগুণ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে লিখেও আয় করতে পারেন। চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধ্যয়নরত, ইন্টারনেটে অনুসন্ধানে দক্ষ এবং বিভিন্ন ভাষায় পারদর্শী ব্যক্তিরা এ কাজ পেতে পারেন।

আরো সুযোগ : ক্রিয়েটিভ ডিজাইন, রাইটিং, ওয়েব, মোবাইল ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্কিং, কাস্টমার সাপোর্ট, সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং, ওয়েবসাইট ডিজাইন, ওয়েব হোস্টিং, প্লাগিন, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজ করা যায়। লেখালেখির প্রতি ঝোঁক, ইংরেজিতে দক্ষতা থাকলে আর্টিকেল রাইটিং, ওয়েবসাইট ও ব্লগ কনটেন্ট তৈরি, কপি রাইটিং, বুক, ই-বুক রাইটিং ইত্যাদি কাজের সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন ভাষায় দক্ষতা থাকলে করতে পারেন ট্রান্সলেটরের কাজ।

কাজ যেখানে : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি তাদের চাহিদা অনুযায়ী ওয়েবসাইটে কাজের বিজ্ঞাপন দেন। যেসব ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্স কাজের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তা অনলাইন মার্কেটপ্লেস নামে পরিচিত। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজের ধরন, সময়, বাজেটসহ বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। ফ্রিল্যান্সাররা কাজের প্রস্তাবনাসহ বিড করেন। সেখান থেকে বাছাই করে ফ্রিল্যান্সারকে কাজ দিয়ে থাকেন বায়ার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist