নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ এপ্রিল, ২০১৯

মানবতাবিরোধী অপরাধ

আরপি সাহা হত্যা মামলার রায় যেকোনো দিন

দানবীর রণদা প্রসাদ (আরপি) সাহা ও তার ছেলেসহ সাতজনকে হত্যার অভিযোগে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে যেকোনো দিন। এই মামলার একমাত্র আসামি হচ্ছেন ৭০ বছর বয়সী টাঙ্গাইলের মাহবুবুর রহমান। যিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি বৈরাটিয়া পাড়ার আবদুল ওয়াদুদের ছেলে। মাহবুবুর রহমান ও তার ভাই আবদুল মান্নান তখন রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন।

এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, ‘মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালায়। অভিযানে রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা, রণদা প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব ও রণদা প্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ ৭ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সবাইকে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। তাদের লাশ আর পাওয়া যায়নি।’

অবশেষে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গতকাল বুধবার বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটির রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখে আদেশ দেয়। এ মামলার আসামি মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি অভিযোগ রয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত। আর আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম। গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন।

এর আগে ২০১৬ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটির তদন্ত শুরুর পর ট্রাইব্যুনাল থেকে পরোয়ানা জারি হলে ওই বছরের নভেম্বরে মাহবুবকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি এখন গাজীপুরের কাশিমপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।

মানবহিতৈষী কাজে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত থাকায় ব্রিটিশ সরকার ‘রায় বাহাদুর’ খেতাব দিয়েছিল রণদা প্রসাদ সাহাকে। মানবসেবায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালে সরকার তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেয়। তিনি আর পি সাহা নামেও সমধিক পরিচিত।

রণদা প্রসাদ সাহার পৈতৃক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রনদা প্রসাদ সাহা; থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে।

এদিকে গত ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুমুদিনী ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বলেন, ‘দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা মানুষের কল্যাণে কাজ করতেন। তিনি এক হাতে যেমন অর্থ আয় করতেন অন্য হাতে সাধারণ মানুষকে তা বিলিয়ে দিতেন। সারা জীবন নির্যাতিত মানুষের কথা তিনি ভেবেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত কুমুদিনী ট্রাস্ট মানবসেবার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা অনুসরণ করে বাংলাদেশের বিত্তশালীরা এগিয়ে এলে দেশের মানুষের কষ্ট থাকবে না।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close