মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানো যায়নি
দেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানো যায়নি। পিলারের কাছে পানির গভীরতা কম থাকায় গতকাল শনিবার দফায় দফায় চেষ্টা করেও নাব্যতা সংকটের কারণে স্প্যানটি বসানো যায়নি। গতকাল সন্ধ্যায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে সকালে ভাসমান ক্রেনের মাধ্যমে দুপুর ১২টার দিকে পদ্মার জাজিরা প্রান্তে সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারে স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। সে সময় দায়িত্বে নিয়োজিত প্রকৌশলীরা স্প্যানটি বসাতে ২ ঘণ্টা সময় লাগার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু গভীরতা কম থাকায় বিকেল পর্যন্ত তা স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে স্প্যান বসানোর কাজে বিরতি দেয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে নদীতে পলি জমে গভীরতা কমে যাওয়ায় মাওয়া প্রান্ত থেকে স্প্যানটি নিয়ে আসতে সময় লেগে যায় সাত দিন। এই স্প্যানটি বসলে পদ্মা সেতুর ৩০০ মিটার দৃশ্যমান হবে। জাজিরা প্রান্তে গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্প্যানটি বসানোর পর দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানোর প্রস্তুতি নেন প্রকৌশলীরা। এর আগে বলা হয়েছিল, পদ্মা সেতুর ৩০০ মিটার এখন দৃশ্যমান। তবে এই সেতুর জাজিরা পয়েন্টে দ্বিতীয় স্প্যান বসানোর কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
জানা যায়, শরীয়তপুরের জাজিরা অংশে গতকাল শনিবার বিকেলে সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানোর জন্য ক্রেন দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তার আগে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়। দ্বিতীয় স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে এই সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় ৫৬ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
২০১৪ সালের ২৮ জুন চায়না মেজর ব্রিজ কনস্ট্রাকশন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। কংক্রিট ও ইস্পাতের তৈরি দ্বিতলবিশিষ্ট এ সেতুতে মোট পিলার বা খুঁটি থাকবে ৪২টি। বর্তমানে প্রায় ৫০ ভাগ পিলার নির্মাণের কাজ চলমান। মোট স্প্যান হবে ৪১টি। একেকটি স্প্যানের ওজন ৩ হাজার মেট্রিক টনের বেশি। পদ্মা সেতুর প্রতিটি পিলারের নিচে ৬টি করে পাইল বসানো হচ্ছে। এই সেতুতে মোট ২৪০টি পাইল বসানো হবে। এই পাইলগুলো ৯৬ মিটার থেকে ১২৮ মিটার মাটির গভীরে বসানো হচ্ছে।
সূত্রমতে, এ পর্যন্ত শতাধিক পাইল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতলবিশিষ্ট এই সেতুর নিচ দিয়ে চলবে রেলগাড়ি আর ওপর দিয়ে যাতায়াত করবে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন। পানির স্তর থেকে ৬০ ফিট উঁচু হবে মূল সেতু। সেতুর প্রস্থ ৭২ ফিট, যা হবে ৪ লেন বিশিষ্ট। এই সেতু নির্মাণে চার হাজারেরও বেশি দেশি-বিদেশি জনবল দিন-রাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানা গেছে।
"