শোবিজ ডেস্ক

  ২১ জুলাই, ২০১৭

বাংলাদেশের সেরা ১০ চলচ্চিত্র

বাংলা সিনেমার রয়েছে প্রাচীন ও গৌরবময় ইতিহাস। ১৯২৭ সালে ঢাকার নবাব পরিবারের তরুণদের মাধ্যমে নির্বাক ছবির যাত্রা হলেও ১৯৫৭ সালে আবদুল জব্বার খানের পরিচালনায় ‘মুখ ও মুখোশ’ নামে প্রথম সবাক সিনেমা নতুন ইতিহাস রচনা করে। তারপর আর এ অগ্রযাত্রা থেমে থাকেনি। সময়ের আবর্তনে বাংলা সিনেমার মুকুটে যুক্ত হয়েছে অসংখ্য সোনালি পালক। আর সেসব সোনালি পালক থেকে সেরা ১০ খুঁজে বের করে আনা খড়ের গাদায় সুই খোঁজার মতোই, তবু চেষ্টা করতে ক্ষতি কী!

০১. জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০), পরিচালক : জহির রায়হান

জহির রায়হান তৎকালীন সময়ে বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনকে অসাধারণ রূপকতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটি জহির রায়হান সরাসরি একুশের প্রভাতফেরি থেকে ধারণ করেন। ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি প্রথমবারের মতো কোনো ছবিতে দেখানো হয়, যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

২. সীমানা পেরিয়ে (১৯৭৭), পরিচালক : আলমগীর কবির

ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে এক তরুণ আর ধনীর দুলালী তরুণী ভাসতে ভাসতে এসে পৌঁছায় জনমানবহীন এক দ্বীপে। সেখানে শুরু হয় তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। একপর্যায়ে দুজন-দুজনের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়, তারপর কাহিনি নেয় নতুন মোড়।

৩. ছুটির ঘণ্টা (১৯৮০), পরিচালক : আজিজুর রহমান

এই ছবিটি একটি সত্য ঘটনার ওপর নির্মিত। ঈদের ছুটি ঘোষণার দিন সবার অলক্ষ্যে স্কুলের বাথরুমে আটকা পড়ে ১২ বছরের এক ছাত্র। আটক থেকে মুক্তি পাওয়ার আকুতি, অমানবিক কষ্টের স্বরূপ পরিচালক তার দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন।

৪. তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩), পরিচালক : ঋত্বিক ঘটক

ছবিটি অদ্বৈত মল্লবর্মনের বিখ্যাত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। তিতাস নদী ও নদী পাড়ের মানুষের জীবনচিত্র ওঠে এসেছে এ ছবিতে। ছবিটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের জরিপে দর্শক ও সমালোচক দুই শ্রেণিতেই প্রথম স্থান অধিকার করে।

৫. চিত্রা নদীর পাড়ে (১৯৯৯), পরিচালক : তানভীর মোকাম্মেল

১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময়কে কেন্দ্র করে এ ছবি নির্মাণ করেছেন তানভীর মোকাম্মেল। ধর্মের পরিচয়ে বিভক্ত বিপুল মানুষের দেশবদল, আবেগ, আশা ও অনিশ্চয়তাকে পরিচালক অসাধারণ শৈল্পিকতায় বন্দি করেছেন।

৬. নবাব সিরাজউদ্দৌলা (১৯৬৭), পরিচালক : খান আতাউর রহমান

বাংলার দুইশ বছরের পরাধীনতার শুরুর চিত্র এটি। পলাশীর প্রান্তরে মীরজাফরের কূটচালে বাংলা-বিহার-ওড়িশার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজিত হন। সেই সঙ্গে বাঙালির সৌভাগ্যের সূর্যও অস্তমিত হয়। সেই ঘটনাই আনোয়ার হোসেন দক্ষ অভিনয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন; যার প্রতিটি সংলাপ আজও মানুষের মুখে মুখে।

৭. বেদের মেয়ে জোসনা (১৯৮৯), পরিচালক : তোজাম্মেল হক বকুল

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম সফল ছবি এটি। ধনী-গরিবের ভালোবাসাই ছবিটির উপজীব্য। ছবিটির প্রতিটি গান আজও মানুষকে আলোড়িত করে। চলচ্চিত্রটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও পুনর্নির্মাণ করে মুক্তি দেওয়া হয়।

৮. সাত ভাই চম্পা (১৯৬৮), পরিচালক : দীলিপ সোম

সাত ভাই চম্পা মূলত বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি রূপকথার গল্প। গল্পটি প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হয়েছিল ১৯০৭ সালে ঠাকুরমার ঝুলি নামক রূপকথার বইতে; যা দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার রচনা করেন এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বইয়ের ভূমিকা লিখেছিলেন। সাত ভাই চম্পার গল্পকে উপজীব্য করে বেশ কয়েকটি বাংলা সিনেমা নির্মিত হয়েছিল। সাত ভাই চম্পা চলচ্চিত্রটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে সর্বকালের সেরা দশটি বাংলা চলচ্চিত্রের মধ্যে একটি হিসেবে স্থান পেয়েছে।

৯. রুপালি সৈকতে (১৯৭৯), পরিচালক : আলমগীর কবির

ছবিটির মূল উপজীব্য হচ্ছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ পরিচালক অসীম সাহসিকতায় ফিতায়বন্দি করেছেন।

১০. ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩), পরিচাক : আলমগীর কবির

ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ধীরে বহে মেঘনা।

ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট ২০০৭ সালে দুটি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের সেরা দশটি চলচ্চিত্রের দুটি তালিকা তৈরি করে। সর্বকালের সেরা বাংলাদেশি চলচ্চিত্র : চলচ্চিত্রবোদ্ধা ও সমালোচকদের দৃষ্টিতে-

১. তিতাস একটি নদীর নাম, ঋত্বিক ঘটক (১৯৭৩)

২. চিত্রা নদীর পারে, তানভীর মোকাম্মেল (১৯৯৯)

৩. নদীর নাম মধুমতি, তানভীর মোকাম্মেল (১৯৯৪)

৪. সীমানা পেরিয়ে, আলমগীর কবির (১৯৭৭)

৫. বেদের মেয়ে জোসনা, তোজাম্মেল হক বকুল (১৯৮৯)

৬. সূর্য দীঘল বাড়ী, শেখ নিয়ামত আলী ও মসীউদ্দীন শাকের (১৯৭৯)

৭. ধীরে বহে মেঘনা, আলমগীর কবির (১৯৭৩)

৮. রুপালি সৈকতে, আলমগীর কবির (১৯৭৯)

৯. শ্রাবণ মেঘের দিন, হুমায়ূন আহমেদ (১৯৯৯)

১০. সাত ভাই চম্পা, দীলিপ সোম (১৯৬৮)

সর্বকালের সেরা বাংলাদেশি চলচ্চিত্র : দর্শকদের দৃষ্টিতে ও ভোটে-

১. তিতাস একটি নদীর নাম, ঋত্বিক ঘটক (১৯৭৩)

২. সীমানা পেরিয়ে, আলমগীর কবির (১৯৭৭)

৩. চিত্রা নদীর পারে, তানভীর মোকাম্মেল (১৯৯৯)

৪. উত্তরা, বুদ্ধদেব দাসগুপ্ত (১৯৯৯)

৫. সাত ভাই চম্পা, দীলিপ সোম (১৯৬৮)

৬. রুপালি সৈকতে, আলমগীর কবির (১৯৭৯)

৭. লালসালু, তানভীর মোকাম্মেল (২০০১)

৮. ধীরে বহে মেঘনা, আলমগীর কবির (১৯৭৩)

৯. সুপ্রভাত, কবীর আনোয়ার (১৯৭৬)

১০. জীবন থেকে নেয়া, জহির রায়হান (১৯৭০)

তথ্য সূত্র ও কৃতজ্ঞতা : মামুন রশিদ ও উইকিপিডিয়া

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist