গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) ও টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ২৪ আগস্ট, ২০১৭

ঈদ সামনে রেখে মহাসড়কে চলছে জোড়াতালির সংস্কার

প্রয়োজনীয় সংষ্কার আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা মহাসড়ক বেহাল আকার ধারণ করেছ। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ সহ ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। চলতি বর্ষায় বৃষ্টির পানি জমে মহাসড়কের গর্তগুলো আরো বড় হয়েছে। একই অবস্থা গাজীপুরের টঙ্গী বাজার থেকে গাজীপুরা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও টঙ্গী-কালিগঞ্জ সড়কের। সম্প্রতি কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে এবারও সড়ক জনপদ বিভাগ (সওজ) মহাসড়কের গর্তগুলোতে ইটের সুড়কি ও পিচ ঢেলে সংষ্কার কাজ শুরু করেছে। জোড়াতালির এই সংস্কার আখেরে নদীর পানি নদীতেই ঢালার মতো অবস্থা। এতে প্রায় প্রতিদিনই বিকল হচ্ছে যানবাহন। এতে বাড়ছে দূর্ঘটনা আর যানজটের আশংকা। তবে মহাসড়কের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করতে না পারলে ভোগান্তি পোহাতে হবে ঈদে ঘরমুখো মানুষের।

স্থানীদের অভিযোগ, মাঝে মাঝে দেখি গাড়ি নিয়ে এসে সড়কে উপর পিচ ঢালা হয়। বৃষ্টি হলেই ওই পিচ উঠে যায়। এখন ঈদ সামনে বলে আবারও ঢেলে জোড়াতালি দিয়ে মহাসড়ক মেরামত করা হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টি ভারি বৃষ্টি হলে পিচ সরে গিয়ে মহাসড়কের অবস্থা আবার আগের মতো হয়ে যাবে।

ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ৩৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় পড়েছে সড়কটির প্রায় ২১ কিলোমিটার অংশ। বাকি অংশ নেত্রকোনা জেলার অর্ন্তভুক্ত। সরজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মহাসসড়কের কাশিগঞ্জ বাজার থেকে শ্যামগঞ্জ রেলগেট পর্যন্ত আনুমানিক ১০ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন অংশের কার্পেটিং উঠে গেছে। মহাসড়কের কাশিগঞ্জ বাজার, বেলতলী মোড়, খিচা বাজার, ডেংগার মোড়, কুমুদগঞ্জ ও শ্যামগঞ্জ বাজার এলাকায় রয়েছে ছোট বড় বড় গর্ত। এরমধ্যে শ্যামগঞ্জ বাজার এলাকায় আনুমানিক ১ কিলোমিটার অংশে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। সম্প্রতি সওজের নিজস্ব উদ্যোগে মহাসড়কটিতে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের শর্তানুযায়ী কতো টাকার কাজ-কারা সংস্কার-মেরামত করছে-এ ধরনের তথ্য সংবলিত কোন সাইনবোর্ড মহাসড়কে দেখা যায়নি। গৌরিপুরে কাশিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন মহাসড়কের বেলতলীর এলাকায় সংস্কার কাজের একজন শ্রমিক বলেন, কোন টেন্ডার না, সরকারি অফিস (সওজ) কাজ করাচ্ছে। আমাদের যে দিকে পিচ ঢালতে বলে আমরা সেই দিকেই ঢালি। তবে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা ময়মনসিংহ সওজের কার্য সহকারী মোখলেছুর রহমানকে সংষ্কার কাজের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে তথ্য জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। একই ভাবে মহাসড়কের শ্যামগঞ্জ বাজার গিয়ে দেখো যায় ইট ফেলে খানাখন্দ ভরাটের কাজ চলছে। ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ খান বলেন, ময়মনসিংহ- নেত্রকোনা সড়কটি নতুন করে নির্মাণের অনুমোদন হয়েছে। তাই ঈদকে সামনে রেখে আপাতত আমাদের বিভাগীয় সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। তবে কোথাও কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। যাত্রীদের ঈদ যাত্রা স্বস্তিদায়ক করার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে কুমুদগঞ্জ এলাকাটি সওজের নেত্রকোনা কার্যালয়ের অধীন।

নেত্রকোনা সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার বলেন, প্রবল বর্ষণে সড়কটির নেত্রকোনা অংশে বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। সেগুলো পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে যাত্রী ও চালকদের দুর্ভোগ কমাতে শ্যামগঞ্জ বাজার, কুমুদগঞ্জসহ বিভিন্ন অংশের খানাখন্দ ভরাটের কাজ চলছে।

এদিকে গাজীপুরের টঙ্গী উপজেলার এলাকাবাসী জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী এলাকায় শুরু হয়েছে ভাঙাচোরা সড়ক মেরামতের কাজ। প্রতিনিয়ত রাস্তা মেরামতের কাজ করা হলেও খুব বেশিদিন টিকছে না। সামান্য ইটের শুড়কী আর কাঁদা মাখানো ভিটি বালু মিশিয়ে সড়কের উপর ঢেলে তার উপর দেয়া হচ্ছে নামে মাত্র বিটুমিন বা পিরিচ ঢালাই। সংশিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি আর নিম্নমানের কাজের জন্য এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ তাদের।অবশ্য এতে খুব একটা লাভ না হলেও পকেট ভারী হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। সরেজমিনে দেখা গেছে, চলতি এ আগস্ট মাসেই টঙ্গীর মিল গেইট, চেরাগ আলী মার্কেট, কলেজ গেইট, হোসেন মার্কেট, গাজীপুরা, স্টেশন রোড, টঙ্গী বাজার ও টঙ্গী প্রেসক্লাবের সামনের মহাসড়কে সংস্কার কাজ করে রোড়স এন্ড হাইওয়ের টঙ্গী কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অল্প বৃষ্টিতেই সংস্কার কাজ ভেস্তে যাচ্ছে। অনিয়ম ও মানসম্মত সড়ক নির্মাণ না করার কারণেই প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ হয় সাধারণ জনগনের।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ টঙ্গী অঞ্চলের কর্মকর্তা শাহীন রেজা বলেন, এখন যে কাজ চলছে তা মেরামত নয়। সড়কের যেসব অংশ ভাঙাচোরা সেখানে বালি ও ইট ফেলা হচ্ছে। এগুলো ঈদের সামনে সড়ক সচল রাখার জন্য সাময়িক ব্যবস্থা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist