বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি

  ১২ আগস্ট, ২০২০

বকশীগঞ্জে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের মানবেতর জীবন

জামালপুরের বকশীগঞ্জে অর্থের অভাবে পরিবারপরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের (কেজি) শিক্ষক-কর্মচারীরা। এমতাবস্থায় তারা ঋণ করে কোনো মতে সংসার চালাচ্ছেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেজি স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৫২টি কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুল রয়েছে। সব মিলিয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৬৫০ শিক্ষক-কর্মচারী কেজি স্কুলের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে শিশুদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন। সেই থেকে কয়েক দফা এই মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু সবশেষ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলে হতাশায় পড়ে যান এই বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা। প্রায় পাঁচ মাস ধরে প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন আদায় করতে না পেরে ধারদেনা, ঋণ করে সংসার চালাচ্ছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। বেশির ভাগ কেজি স্কুলের শিক্ষকরা আর্থিক সংকটে ভুগছেন। অনেকেই শুধুমাত্র কেজি স্কুলের ওপর নির্ভর করেই সংসার চালাতেন।

করোনা পরিস্থিতির কারণে তারা পরিবার নিয়ে কঠিন অবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে গিয়ে প্রাইভেট পড়ানোও বন্ধ করে দিয়েছেন শিক্ষকরা। ফলে পুরোপুরি আয়ের পথ বন্ধ রয়েছে কিন্টারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের। আবার সম্মানের ভয়ে যেমন তেমন কাজও করতে পারছেন না এই শিক্ষকরা। এমতাবস্থায় পরিবারপরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা।

এই শিক্ষকরা করোনা উপলক্ষে প্রণোদনা চেয়েছেন সরকারপ্রধানের কাছে। তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রণোদনা চেয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছেন। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তারপরও তারা প্রধানমন্ত্রীর দিকে চেয়ে রয়েছেন।

উপজেলার ডলফিন আইডিয়াল একাডেমির অধ্যক্ষ জাকিউল ইসলাম সোহেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায় অনেক সেক্টরকে ও কর্মহীনদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছেন। তাই আশা করছি, তিনি আমাদের দিকেও নজর দেবেন।

এ বিষয়ে জিনিয়া ওমর মডেল একাডেমির অধ্যক্ষ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার আলী জানান, আমাদের কয়েকশ’ শিক্ষক করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন। স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় অভিভাবককরা বেতন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে শিক্ষকরা অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

তিনি সরকারের কাছে কেজি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রণোদনা দেওয়ার জোর দাবি জানান। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম চালুর দাবি জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close