কে এম রুবেল, ফরিদপুর

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২০

পাটবীজ উৎপাদনে সাফল্য ফরিদপুরের চাষিদের

ফরিদপুরে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত উচ্চ ফলন শীল বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১)-এর বীজ উৎপাদন করে সাফল্য পেয়েছেন চাষিরা। অল্প খরচে ও অল্প সময়ে বীজের বাম্পার ফলনে খুশি তারা। এতে তাদের সহযোগিতা করছে ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষি বিভাগ বলছে, বীজের উৎপাদন অব্যহত থাকলে আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে আমরা নিজেদের উৎপাদিত বীজ দিয়েই নিজেদের চাহিদা পূরন করতে পারব।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, ফরিদপুরে প্রায় ৮২ হাজার হেক্টোর জমিতে তোষা জাতের পাটের আবাদ হয়ে থাকে। এখানে যে জাতের পাট চাষ হয় তার বীজের জন্য ভারতীয় বীজের উপর নির্ভরশীল কৃষকরা। প্রায় পুরোটা বীজই ভারত থেকে আমদানি করতে হয়।

এদিকে বৈচিত্র্যময় ফসল ও বীজ উৎপাদনে খ্যাতনামা জেলা ফরিদপুর। এখানে ব্যতিক্রময় ফসল উৎপাদন করে দেশের অর্থনেতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে চাষিরা। চলতি বছর পাট বীজ উৎপাদন করে সাড়া ফেলেছেন তারা। বীজ উৎপাদনের ধারাবাহিকতা অব্যহত থাকলে আগামীতে অন্যদেশ থেকে আর পাট বীজ আমদানি করতে হবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি মৌসুমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সদর উপজেলার ৩০ জন চাষি উন্নত জাতের উচ্চ ফলন শীল বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) পাট বীজ বপন করেন। উঁচু জমিতে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বীজ বপনের পর থেকে সামান্য পরিচর্যা ও পরিমিত সার প্রয়োগ করে বীজ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন তারা। চাষিদের ক্ষেতে এখন বীজ পেকে সোনালী রং ধারণ করেছে। কিছু কিছু চাষি ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পাট বীজ উৎপাদনকারী চাষিরা বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শনিয়ে এই প্রথম আমরা পাট বীজ উৎপাদন করেছি। আমরা এতোদিন ইন্ডিয়ান বীজ দিয়ে পাট উৎপাদন করেছি। অনেক সময় বীজ ভাল ভাবে গজায়নি। পাটও ভাল হয়নি। আর সেজন্যই আমরা এখন নিজেরাই বীজ উৎপাদন করছি। নিজেদের উৎপাদিত বীজ দিয়েই পাট উৎপাদন করব। বীজ উৎপাদন করে আমরা লাভবান।

সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুর সদর উপজেলার চাষিরা পাট বীজ উৎপাদন করে সাফল্য পেয়েছে। পাট বীজ চাষিদের আমরা নিয়মিত কৃষক মাঠ স্কুলের মাধ্যমে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছি। আর বীজ উৎপাদন করে সাফল্যও পেয়েছে চাষিরা। চলতি বছর জেলার ৩০জন চাষি এক থেকে দেড় টন পাট বীজ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, পাট উৎপাদনের ক্ষেত্রে সারা বাংলাদেশের মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে ফরিদপুর। আমাদের ব্রান্ডিংও পাট। কৃষি মন্ত্রীমহোদয়ের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের বিজ্ঞানিদের উদ্ভাবিত জাত বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) বীজ উৎপাদন শুরু করেছি। আমরা আশা করছি এ বছরেই প্রায় ১ থেকে দেড়টন বীজ উৎপাদন করতে সক্ষম হব। বীজ উৎপাদন অব্যহত থাকলে আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে আমরা পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে পারব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close