ওহী আলম, নোবিপ্রবি

  ২২ নভেম্বর, ২০১৯

আবাসন সংকটে বাড়ছে দুর্ভোগ ২ মাসেও খুলেনি ছাত্র হল

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) আবাসন সংকটের মধ্যেই দুই মাস ধরে বন্ধ আছে একমাত্র ছাত্র হলটি। গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ কেন্দ্র করে হলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে অধিক খরচে মেস ও ঘর ভাড়া নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে থাকছে ছাত্ররা।

প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে হল রয়েছে ৫টি। এর মধ্যে একটি হলের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ছেলেদের একটি হল ছাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত হলেও তার এখন ফাঁকা পড়ে আছে। চালু আছে শুধু মেয়েদের দুটি হল। ফলে তীব্র আবাসন সংকটে আছে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ছাত্রীদের জন্য বিবি খাদিজা হল ও ছাত্রদের জন্য ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হল নিয়ে ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু দেশের ৫ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নোবিপ্রবি। শিক্ষার্থী বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় সমাবর্তনে আচার্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ছাত্রীদের জন্য বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল উদ্বোধন করেন। কিন্তু এর প্রায় ৭ মাস পর গত ২৩ সেপ্টেম্বর ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত আব্দুল মালেক উকিল হল থেকে ছাত্রীদের ওই হলে স্থানান্তরিত করা হয়। এছাড়া ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল লাগোয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রী হলের কাজ এখনো শেষ হয়নি। কবে নাগাদ শেষ হবে তারও কোন ঠিক নেই।

এদিকে গত গত ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ছাত্রদের জন্য সচল থাকা ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়া ছাত্ররা এখন থাকছেন বন্ধুবান্ধবদের মেসে। হলটি কবে চালু হবে এ ব্যাপারে প্রশাসন থেকে এখনো কিছুই জানানো হয় নি।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র আরাফাত বলেন, ‘আমরা যারা হলে ছিলাম হঠাৎ করে হল বন্ধ হওয়াতে নিরুপায় হয়ে চড়া দামে বাসা ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আবেদন অতিশীঘ্রই যেন ছাত্রদের নানামুখি সমস্যার কথা চিন্তা করে হল চালু করার ব্যবস্থা নেয়।’

ইনফরমেশন টেকনোলোজি ইন্সটিটিউটের ছাত্র নিলয় জানান, ‘হল বন্ধ হওয়ায় সবাই এখন বাহিরে থাকে, ফলে মেস কিংবা বাসাগুলোতে অনেক চাপ পড়েছে। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা এই শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য বাসও পর্যাপ্ত বাড়ানো হয় নি। তাই বাদরের মত ঝুলে যাতায়াত করতে হয়। এতে যাত্রীর চাপে বাস চালকেরও অনেক হিমসিম খেতে হয়।’

ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের সদ্য নিয়োগ পেয়েছেন প্রভোস্ট ড. মো. আনিসুজ্জামান। প্রতিদিনের সংবাদকে তিনি জানান, ইউজিসি ও এডুকেশন মিনিস্ট্রির অনুমোদন নিয়ে হল মেরামতের জন্য বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং অতি দ্রুত হল মেরামতের কাজ শুরু হবে। মেরামত শেষে ছাত্রদের হলটিতে উঠানো হবে।’

এদিকে আবদুল মালেক উকিল হল ফাঁকা হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেখানে ছাত্রদের উঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। গত ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ২৩ অক্টোবর থেকে আবেদন শুরু হয়ে ৭ নভেম্বর আবেদনের সময় শেষ হয়।

আবদুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ড. ফিরোজ আহমেদ এ ব্যাপারে বলেন, এখন পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৪০০টি আবেদন জমা পড়েছে। হলে মোট সিট ৪৫০ টি। ছাত্রদের ভাইভা নিয়ে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ মাসের শেষে ছাত্ররা হলে উঠতে পারবে। দ্রুত ভাইভা নেওয়া শুরু হবে।’

সদ্য স্নাতক শেষ করা এক শিক্ষার্থী বলেন, আবাসন সংকট ও পূর্বে হলে সিট বরাদ্দের যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাবে অনেক শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস লাইফ শেষ করতে হয়েছে হলে থাকার অভিজ্ঞতা না নিয়েই। সিট বরাদ্দের নতুন প্রক্রিয়াকে তিনি ইতিবাচক ভাবেই দেখছে। তিনি আশা করছেন সবগুলো হল একত্রে চালু হলে আবাসন সংকট অনেকাংশে নিরসন হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close