গোলাম মোস্তফা খান, দাকোপ (খুলনা)

  ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮

পশুর নদীর ভাঙনের কবলে চালনা পৌরসভার নলোপাড়া

খুলনার দাকোপ উপজেলার চালনা পৌরসভার নলোপাড়ার পাশদিয়ে বয়ে যাওয়া পশুর নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ভাঙনের কবলে বিস্তীর্ণ এলাকাসহ নলোপাড়াবাসি। ভাঙনে হারিয়ে গেছে শত শত বিঘা ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, বেড়িবাঁধ এবং বিলিন হয়েছে বসতভিটা। নিঃস্ব হয়েছে হাজারও মানুষ। জানা গেছে, পশুর নদীর ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল বৃষ্টি মৌসুমে যা এখনও থামেনি। গত এক বছর ভাঙনে প্রায় ৭০টি পরিবারকে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে। এমন অবস্থায় পৌরসভার নলোপাড়ার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

পশুর নদীর তীরে গিয়ে দেখা যায়, নদীর খর¯্রােতে মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে কয়েকটি ঘরবাড়ি। তীব্র ভাঙনের মূখে ছোট ছোট সন্তাদের নিয়ে নদীর পাশে বসবাস করছে হতদরিদ্র পরিবারগুলি।

ভাঙ্গনের শিকার নলোপাড়ার বাসিন্দা বাদশা গাজী (৩৬) জানান, পশুর নদীর ভাঙনে আমার বসতভিটা প্রায় বিলিন হওয়ার সম্মুখে। নদীতে জোয়ার হলে পানিতে ডুবে যায় ঘরবাড়ি। তখন খুব ভয়ে থাকতে হয়। তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় হলে এখানে এসে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়। কিন্তু ভোট হয়ে গেলে আর ফিরে দেখেনা আমাদের বাড়ি আছে কিনা।

পশুর নদীর ভাঙনে তিনবার বিলিন হয়ে গেছে মো. নুরুল হকের (৭২) বাসযোগ্য ঘরবাড়ি। তিনি বলেন, যেভাবে ঘরবাড়ি গিলে খাচ্ছে পশুর নদী। তাতে এখানে আর বসবাস করা সম্ভয় নয়। তিন দফায় পশুর নদীর ভাঙ্গনে নিজস্ব ভিটা বাড়ি বিলিন হওয়ার পর এখন অন্যের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসাবে জীবন ধারণ করে চলতে হচ্ছে।

নলোপাড়ার বাসিন্দা মহাসিন সরদার (৫০) বলেন, বাসযোগ্য ঘরটি নদীর তীরে বাঁশের দ্বারা ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। নদীতে জোয়ার হলে নির্ঘুম কাটে রাত। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বসে থাকতে হয় অনেক সময়।

গতকাল সোমবার দুপুরে ভাঙনের শিকার পশুর নদী পাড়ের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নদী গর্ভে তাদের সব চলে গেছে। ফসলি জমি, বসতভিটাসহ সব হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব। বেঁচে থাকার তাগিদে তাদের রাস্তা ও অন্যত্র আশ্রয় নিতে হচ্ছে।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আইয়ুব কাজী বলেন, পৌরসভার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। এ ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে কোটি কোটি টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এতো টাকা পৌরসভায় বরাদ্দ নেই।

বিষয়টি জানার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলি আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও সংযোগ না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

দাকোপ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ আবুল হোসেন বলেন, শহর রক্ষা বাঁধের জন্য পৌর মেয়র একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাজেট পেয়েছেন। সেটি নিয়ে কিছুদিন আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সভা করেছেন। আগামীতে আমরা পৌর রক্ষা বাঁধের জন্য যা কিছু করনীয় করবো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close