সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

  ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ

৮ বিভাগে শিক্ষক শূন্য বিপাকে শিক্ষার্থীরা

* ১৫ শিক্ষকের বিপরীতে আছেন ৭ জন * পাঠদান ব্যাহত

সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের নিয়ম অনুযায়ী ১৫ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিতে আছে মাত্র ৭ জন। ৮টি বিভাগে শিক্ষক পদ শূন্য থাকায় পাঠদান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। বিপাকে পড়েছে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী। ফলে কলেজটিতে হারাতে বসেছে অতীতের সুনাম।

কলেজটিতে ৮টি বিষয়েই অনেক বছর ধরে কোনো শিক্ষক নেই। শিক্ষক শূন্য থাকার পরও অদৃশ্য কোনো এক কারণে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। সংকট কাটাতে পাঠদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষকদের। ফলে পাঠদানের ঘাটতি থাকায় পাসের হার দিন দিন কমতে শুরু করেছে। কলেজ বিমুখ হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত অভিভাবকরা।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, সরকারি মহিলা কলেজটি ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও সরকারিকরণ করা হয় ১৯৯৭ সালে। প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে এই কলেজটি ২০১১ সালে ডিগ্রি পর্যায়ে উন্নীত করা হয়। ডিগ্রিতে উন্নীত হওয়ার পর থেকে অধ্যাবদি কোনো পদ এখন পর্যন্ত সৃষ্টি করা হয়নি। পদ সৃষ্টি না হওয়ায় শুরুতেই থমকে আছে প্রতিষ্ঠানটি। অন্যান্য কলেজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারছে না।

কলেজটিতে ৮টি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার অবিহিত করা হলেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তারা আরো বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, উদাসীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আটকে আছে কলেজটির কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ।

এদিকে শিক্ষকরা জানান, এমনিতেই শিক্ষক সংকট থাকায় আমাদের অতিরিক্ত চাপ নিতে হচ্ছে। উল্লেখিত বিষয়ে কোনো শিক্ষক না থাকায় ক্লাস নিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। আরো অনেকেই জানান, ইতিহাস বিভাগে ১ বছর ধরে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ৩ বছর ধরে, দর্শন (যুক্তিবিদ্যা) বিভাগে ৩ বছর ধরে, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ৩ বছর ধরে, গণিত বিভাগে ২ বছর ধরে, জীববিজ্ঞান বিভাগে ১ বছর ধরে, মনোবিজ্ঞান বিভাগে ৩ বছর ধরে, রসায়ণ বিভাগে ৪ বছর ধরে শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। তারা আরো বলেন এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার অবিহিত করা হলেও কোনো প্রকার পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে এসব বিষয়ে পাঠ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ পরাগ কান্তি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির সমস্যার শেষ নেই। শুধু শিক্ষকই নয়, রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য পদে লোকবল সংকটও। কলেজটিতে পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ায় বছরে ১৬টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৬২টি পদের মধ্যে সৃষ্ট পদ আছে ১৫টি। তন্মধ্যে বিভিন্ন পদে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ জন। এতে কাজের বাড়তি চাপ ও নানান ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীদের। শিক্ষক সংকট বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সংসদ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে বিষয়টি জানিয়েছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close