এ কে এম মজাহারুল ইসলাম, উলিপুর (কুড়িগ্রাম)

  ০২ জুন, ২০১৮

পাট চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন উলিপুরের কৃষক

কুড়িগ্রামের উলিপুরের কৃষকরা নানা প্রতিকূলতার কারণে পাট চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। চলতি মৌসুমে উপজেলায় মাত্র এক হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পাট ক্রয় কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত এসব পাট চাষি ক্রমেই লোকসানের মুখে পড়ে পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। প্রতিবছর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় তিন হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়।

চলতি বছর গত বছরের তুলনায় প্রায় দুই হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের কম চাষ হয়েছে। এক সময়ে সোনালি আঁশ পাটকে ঘিরে ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে উলিপুর হাট। কিন্তু আজ তা শুধুই স্মৃতি। উপজেলা কৃষি অফিসার অশোক কুমার রায় জানান, বিভিন্ন কারণে কৃষক পাট চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তবকপুর ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামের আবদুস সালাম বলেন, পাট চাষ করে লোকসান হচ্ছে। এ এলাকায় জমির পর জমি শুধু পাট আর পাট ছিল। এখন কেউ আর পাট চাষ করে না। কৃষকরা জানান, শ্রমিক সংকটের কারণে পাট চাষে বেশি খরচ হয়। কিন্তু বাজারে পাটের দাম না থাকায় এবার তারা পাট চাষ করেননি। তারা আরো বলেন, পাটের বীজ, রাসায়নিক সার ও পাট পরিচর্যায় পূর্বের তুলনায় এখন খরচ অনেক বেশি। কিন্তু পাট উৎপাদন হয় অনেক কম। বাজারে বিক্রি করতে গেলে মেলে না কাক্সিক্ষত দর। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ্য মাসের শুরুতে প্রতিটি পাট গাছের উচ্চতা ২-৩ ফিট হওয়ার কথা থাকলেও এ বছর দেড় থেকে দুই ফিট লক্ষ্য করা গেছে।

অনেক কৃষকই বৈশাখ মাসে পাট ক্ষেতে নিড়ানি দেওয়া শুরু করলেও অতিবৃষ্টির কারণে সিংহভাগ পাট ক্ষেত পরিচর্যা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া শিলাবৃষ্টির কারণে পাট চাষে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে এ অঞ্চলে পাট চাষিরা পাট ঘরে তুলতে পারবেন না বলে আশঙ্কা করছেন। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে বুড়িতিস্তা নদী পাড়ে ব্যাহত হয়েছে পাট চাষ। কিছু জমিতে চাষ করা হলেও তা তলিয়ে আছে। অনেক কৃষকেরই অভিযোগ, বুড়িতিস্তা নদী অবৈধ দখলে নিয়ে পানি সরবরাহ বন্ধ করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কুড়িগ্রাম পাট অধিদফতরের উন্নয়ন সহকারী রওশন আরা বেগম বলেন, মূলত লোকসানের কারণেই পাট চাষ করতে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। পাট চাষিদের সঠিক সময়ে সরকারিভাবে প্রণোদনা দিলে আবারও আগের মতো পাট চাষে এগিয়ে আসবে চাষিরা। সেই সঙ্গে কৃষকদের ন্যায্যমূল্যর বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist