গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
মাদ্রাসা শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা
১৬ পরিবারের ২৮ ঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে মাদ্রাসা শিক্ষক মহির উদ্দিন মাস্টারকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যার জের ধরে আসামি পক্ষের ১৬টি পরিবারের কমপক্ষে ২৮ ঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী এবং বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার সকালে উপজেলার সিধলা ইউনিয়নের হাসনপুর কতুবুপুরে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে এসে ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে গত শুক্রবার রাতে পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন মহির উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে সোমবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মামলা হলেও বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত হত্যাকান্ডে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহির উদ্দিনের বাড়ি উপজেলার সিধলা ইউনিয়নের হাসনপুর কতুবুপুর গ্রামে। তিনি তারাকান্দা উপজেলার তারাটি মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ছিলেন। গ্রামে মাছের খামারে যাতায়াতের রাস্তা নিয়ে মহির উদ্দিনের সঙ্গে বিরোধ চলছিল প্রতিবেশী সাইদুল সরকারের পরিবারের। গত শুক্রবার রাতে মহির উদ্দিন নিজের খামার থেকে হ্যান্ডট্রলি ভরে মাছ হাসনপুর কতুবুপুর বাজারে নিয়ে আসার সময় সাইদুল ও তার লোকজন বাধা দেয়। এ সময় দুই পক্ষের বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সাইদুলের লোকজন মহির উদ্দিন ও তার চাচাতো ভাই চাঁন মিয়াকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়ারা দুইজনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এর মধ্যে মহির উদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সোমবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার তার মৃত্যু হয়। এদিকে মহির উদ্দিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। বুধবার সকালে তার জানাজার পূর্ব মুহূর্তে স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আসামি পক্ষের ১৬টি পরিবারের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট করে ব্যাপক তান্ডব চালায়। এতে আসামি পক্ষের পরিবারের বসতঘর, রান্নাঘর ও গোয়ালঘরসহ কমপক্ষে ২৮ ঘর পুড়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কতুবুপুর গ্রামের মৌলভীবাড়ির মমতাজ উদ্দিনের পুত্র আনোয়ার হোসেন জানান, হামলায় তাদের পাঁচটি বাড়িঘরের প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত ও লুটপাট হয়েছে। আবদুল গণির পুত্র আবুল কাসেম ভুলন জানান, তাদের ৯টি পরিবারের প্রায় ১৮ লাখ টাকার মালামাল ভস্মীভূত ও লুট হয়েছে।
সাইদুল সরকারের বাড়িতে দুইটি পরিবারের প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল ভস্মীভূত হয়েছে বলে দাবি তার। গৌরীপুর থানার ওসি দেলোয়ার আহম্মদ বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। তবে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি বলে জানান তিনি।
"