নড়াইল প্রতিনিধি

  ২৪ এপ্রিল, ২০১৮

নড়াইলে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম পাট আবাদ

‘পাটের জেলা’ খ্যাত নড়াইলে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্ধেকের কম পাটের আবাদ হয়েছে। অথচ, পাট আবাদের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। কৃষকরা বলছেন, পাটের উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম অনেক কম থাকা, পাট থেকে ধানের দাম বেশি হওয়া, বিভিন্ন প্রকার রোগ বালাই, অনাবৃষ্টি, পচানিতে সমস্যা ইত্যাদি কারণে কৃষক এবার পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। প্রতি মৌসুমে জেলার প্রায় ৩৫ হাজার নারী-পুরুষ পাটের আঁশ ছাড়িয়ে মৌসুমি বেকারত্ব দূর করলেও এবার তারা হয়তো এ কাজ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, কৃষি প্রধান নড়াইলের অন্যতম ফসল পাট। ভৌগোলিক কারণে এখানকার পাটের গুণগত মানও অনেক ভালো। কিন্তু জেলায় এবার ২৩ হাজার ৬১৬ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ২২ এপ্রিল পর্যন্ত চাষ হয়েছে ১০ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে।

সদরের বাঁশগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিরাপদ বিশ্বাস বলেন, ‘আমি প্রতি বছর তিন একর জমিতে পাটের চাষ করলেও এবার এক শতক জমিতেও পাট চাষ করিনি। ধানের দাম ভালো হওয়ায় এসব জমিতে ধানের চাষ করেছি।’ একই উপজেলার চারিখাদা গ্রামের কৃষক আক্তারুজ্জামান, মাইজপাড়ার জালাল শেখ, লোহাগড়ার কামারগ্রামের কাদের জানান, দুই বছর পাটের ভালো দাম না থাকায় এবার তারা পাটের আবাদ করেননি। চাষের শুরু থেকে বিক্রি করা পর্যন্ত প্রতি একরে গড়ে ২৫ হাজার টাকা খরচ হলেও পর পর দু ইবছর তাদের খরচ ওঠেনি। লোহাগড়া উপজেলার শালনগর গ্রামের কৃষক আলেক মিয়া জানান, বাজারে পাট থেকে ধানের চাহিদা এবং দামও বেশি। সে জন্য অনেকে পাটের আবাদ ছেড়ে দিচ্ছেন। এদিকে, বাজারে পাটের বীজ অবিক্রিত থাকায় ব্যবসায়ীরাও আর্থিকভাবে লোকসানের মুখে পড়েছেন। নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ বাজারের পাটের বীজ ব্যবসায়ী মুকুল হোসেন বলেন, দুই কেজির প্যাকেট ১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার চাহিদার চার ভাগের এক ভাগ বীজ বিক্রি হয়েছে। অন্যবার কৃষক কয়েকগুণ বেশি দামে পাটের বীজ ক্রয় করলেও এবার অবিক্রিত থেকে গেছে। এদিকে, নড়াইল বিএডিসি (বীজ বিপনন) বিভাগ জানিয়েছে, সরকারিভাবে এবার নড়াইলে পাটের বীজ আসেনি। তবে, কেন আসেনি তা তারা বলতে পারেননি।

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, গত বছর কৃষক পাটের দাম ভালো না পাওয়ায় এবার তারা ধান চাষের দিকে ঝুঁকেছে। আমরা চেষ্টা করছি বোরো ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দিয়ে পাটের আবাদ করানোর। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও কাছাকাছি যেতে পারে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist