আবদুল আলীম, নারায়ণগঞ্জ

  ২১ জানুয়ারি, ২০১৯

উদ্বোধনের অপেক্ষায় দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর উদ্বোধন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। এ সেতু চালু হলে পুরনো সেতুর সংস্কারকাজ শুরু হবে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে। দ্বিতীয় সেতুটির উদ্বোধন হলেও উড়াল সড়ক ব্যবহার করতে হবে সিলেট থেকে ঢাকায় প্রবেশকারী যানবাহনের। সেতুর কাজ সম্পন্ন হলেও উড়াল সড়ক নির্মাণকাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। সেতুটি এখনই উদ্বোধন করা হবে, নাকি উড়াল সড়ক নির্মাণ শেষে একসঙ্গেই উদ্বোধন করা হবে, এ বিষয়ে অনুমোদনের জন্য প্রকল্প পরিচালক সেতু মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এ প্রকল্পের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাফিউল ইসলাম।

তিনি বলেন, সেতুর কাজ শেষ হলেও এর সুফল এখনো তেমনভাবে পাওয়া যাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত সেতুর সঙ্গে উড়াল সড়কের সংযোগ না ঘটছে, ইন্টার সেকশনের কাজ চলছে। এতে আরো ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে। চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের দিকে আসতে কোনো সমস্যা নেই। সেতুর নিচ দিয়ে ইউটার্ন করে সিলেটে প্রবেশের জন্য রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। তবে সিলেট থেকে সেতু দিয়ে ঢাকার দিকে প্রবেশ করতে উড়াল সড়ক ব্যবহার করতে হবে। এটার কাজই এখন চলছে। এখন মন্ত্রণালয় তারিখ নির্ধারণ করলেই কাঁচপুর ২য় সেতুর উদ্বোধন করা হবে।

মন্ত্রণালয় যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে, আমরা সেভাবেই কাজ করব। ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে এ সেতুর কাজ শুরু হয়। সেতুটির পশ্চিম পাশ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এবং পূর্বপাশ সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শীতলক্ষ্যা নদীতে ৫টি পিলারের ওপর নির্মিত নতুন এই সেতুটি স্টিলের গার্ডারের ওপর কংক্রিটের ঢালাইয়ের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে। ১০০ বছরের স্থায়িত্বকাল নির্ধারণ করে সেতুটির নির্মাণকাজ করে জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবায়শি কর্পোরেশন, শিমিজু কর্পোরেশন, জেএফআই ও আইএইচআই।

১ হাজার ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর মোট ব্যয়ের ৭৫ ভাগ অর্থ দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-জাইকা। আর ২৫ ভাগ অর্থ ব্যয় করে বাংলাদেশ সরকার। ৪ লেনের নতুন এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৯৭ দশমিক ৫ মিটার। প্রস্থ ১৮ দশমিক ৩ মিটার। এ সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পূর্বাঞ্চলের ১৮ জেলার ৩৩টি প্রধান রুটের যাত্রীদের দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল। তাদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুটি নির্মাণের নির্দেশ দেন।

এ সেতুটি চালু হলে রাজধানীর সঙ্গে দেশের পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ আরো সহজ হবে। দেশের দুটি বাণিজ্যিক জেলা সিলেট ও চট্টগ্রাম, যার ওপর দেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল, তার সঙ্গে যোগাযোগ আরো সহজ হবে। গতিশীল হবে দেশের অর্থনীতি। এখন যানজটের কারণে পণ্য পরিবহন খরচ অনেকটাই বেড়ে যায় বলে জানান ব্যবসায়ই মহল।

তারা আরো বলেন, রাজধানীতে শাকসবজিসহ আরো কাঁচামাল এ পথেই আসে। যানজটের কারণে অনেক সময় শাকসবজি ও কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যায়। ফলে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হই। কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুটি উদ্বোধন হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। আমরা নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতে পারব এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও কমবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) প্রশাসন মোল্লা তাসলিম হোসেন বলেন, আগে যাত্রাবাড়ীতে সারাক্ষণ যানজট লেগেই থাকত। কিন্তু ফ্লাইওভার হওয়ার পর এখন আর কোনো যানজট নেই। যানবাহন দ্রুত চলাচল করতে পারছে কোনো বিঘœ ছাড়াই। আশা করছি কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে এখানেও আর কোনো যানজট থাকবে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close