ক্রীড়া প্রতিবেদক
সাভারে তামিম-সৌম্য ঝড়
আগামী পরশু মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি। সিরিজপূর্ব প্রস্তুতিটা ভালোই হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের। আরেকটু ছোট করে বললে ব্যাটসম্যানদের। কাল সাভারের বিকেএসপিতে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে রান রানোৎসব করেছে দুই দলের ব্যাটসম্যানরাই।
মুদ্রা নিক্ষেপের লড়াইয়ে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেটে ৩৩১ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাব দিতে নেমে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। এ দুজনের শতকের ওপর দাঁড়িয়ে ৪১ ওভারে ছয় উইকেটে ৩১৪ রান করে বিসিবি একাদশ। আলোক স্বল্পতার কারণে ম্যাচে ৯ ওভার বাকি থাকতেই দিনের খেলা শেষ হয়। পরে ডাক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ৫১ রানের জয় পায় স্বাগতিক শিবির।
কাল আগে ব্যাট করতে নেমে ১৫ ওভারে উদ্বোধনী জুটিতে দলীয় সংগ্রহ ১০০ ছাড়িয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কাইরেন পাওয়েল এবং শাই হোপকে বিচ্ছিন্ন করেন নাজমুল ইসলাম অপু। ৪৩ রানে আউট হয়েছেন পাওয়েল। পরে ইনিংসের মাঝপথে হোপকেও শিকারে পরিণত করেছেন নাজমুল। ফেরার আগে দলীয় সর্বোচ্চ ৪১ রান করেছেন ক্যারিবীয় ওপেনার। দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা ড্যারেন ব্রাভো আউট জয়েছেন ২৪ রানে।
টেস্ট সিরিজে ব্যাট হাতে আলো ছড়ানো শিমরন হেটমায়ার বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন। তাকে থামিয়েছেন রুবেল হোসেন। টাইগার ওপেসারকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সৌম্য সরকারের ক্যাচে পরিণত হয়েছেন হেটমায়ার। ফেরার আগে ২৭ বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ৩৩ রান করেন তিনি। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে অভিজ্ঞ মারলন স্যামুয়েলসকে ফেরান মাশরাফি।
বিনা উইকেটে ১০১ থেকে ১৭৬ পর্যন্ত যেতে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ পর্যন্ত ক্যারিবীয়রা ৩০০ ছাড়িয়েছে সাত ও আটে নামা দুই ব্যাটসম্যানের নৈপুণ্যে। রোস্টন চেইজ ৫১ বলে ছয়টি চার ও একটি চারে অপরাজিত থাকেন ৬৫ রানে। ৩২ বলে আটটি চার ও একটি ছক্কায় ৪৮ রান করা ফ্যাবিয়ান অ্যালেন আউট হয়েছেন
রুবেলের বলে। রুবেল-নাজমুলের মতো দুটি করে উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান রানাও। মাশরাফি বিন মর্তুজা ও শামীম পাটোয়ারি একটি করে উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন।
লক্ষ্যটা বিশালÑ ৩৩২ রানের। এমন পাহাড়সম লক্ষ্য দেখেও ভড়কে যায়নি বিসিবি একাদশ। উদ্বোধনী জুটিতে উড়ন্ত সূচনা করে স্বাগতিকরা। নয় ওভার শেষ হওয়ার আগইে তামিম ও ইমরুল কায়েস মিলে করে ফেলেন ৮১ রান। জুটি ভাঙে ইমরুল কায়েসের বিদায়ে। পাঁচটি চারের সুবাদে ২৭ রান করেছিলেন বাঁ-হাতি ওপেনার। তবে তামিম যোগ্য সঙ্গটা পেয়েছেন সৌম্যের কাছ থেকে। ক্যারিবীয়দের পিটিয়ে ছাতু বানিয়ে দুই বাঁ-হাতিই তুলে নেন ব্যক্তিগত শতক।
ইনজুরি কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর মাঠে ফেরা তামিম তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ৭০ বলে। শেষ পর্যন্ত ৭৩ বলে ১৩ চার ও চার ছক্কায় ১০৭ রান করেন দেশ সেরা ওপেনার। পরে দলপতি মাশরাফিকে নিয়ে এগিয়ে যান সৌম্য। বাঁ-হাতি এই ওপেনার শেষ পর্যন্ত অজেয় থাকলেন ১০৩ রানে। ৮৩ বলে সাতটি চার ও ছয়টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। দুর্দান্ত এই ইনিংসেই ওয়ানডে দলের একাদশে থাকার একটা দাবি জানিয়ে রাখলেন সৌম্য। ১৮ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন মাশরাফি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৫০ ওভার, ৩৩১/৮
(কাইরন পাওয়েল ৪৩, হোপ ৮১, ব্রাভো ২৪, স্যামুয়েলস ৫, হেটমায়ার ৩৩, রভম্যান পাওয়েল ০, চেইস ৬৫*, অ্যালেন ৪৮, পল ২, আমব্রিস ১০*; রুবেল ২/৫৫, মাশরাফি ১/৩৭, রানা ২/৬৫, শাহিন ০/১৮, সৌম্য ০/৭২, নাজমুল ২/৬১, শামিম ১/১৬)
বিসিবি একাদশ : ৪১ ওভার, ৩১৪/৬
(তামিম ১০৭, ইমরুল ২৭, সৌম্য ১০৩*, মিঠুন ৫, আরিফুল ২১, তৌহিদ ০, শামিম ৯, মাশরাফি ২২*; রোচ ০/৪৯, টমাস ১/৫৭, চেইস ২/৫৭, পল ০/৪২, বিশু ২/৮১,
অ্যালেন ১/১৯)
ফল: ডি/এল পদ্ধতিতে ৫১ রানে জয়ী
বিসিবি একাদশ
"