আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জলবায়ু বিষয়ে ট্রাম্পের দিকে তাকিয়ে বিশ্ব
ইতালির সিসিলির তাওরমিনাতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশ্বের শিল্পোন্নত সাত দেশের জোট জি-সেভেনের শীর্ষ সম্মেলন। এ সম্মেলনের মূল আলোচ্যসূচি ছিল প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
জি-সেভেনভুক্ত ছয়টি সদস্য রাষ্ট্রই এ চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে তাদের অবস্থান সম্মেলনে পরিষ্কার করেনি।
সম্মেলনে জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলোর নেতারা চেষ্টা করেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছ থেকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি নিয়ে কোনো অঙ্গীকার আদায় করতে পারেননি। ট্রাম্প অবশ্য তার নির্বাচনী প্রচারের সময়ই এ চুক্তি থেকে সরে আসার কথা বলেছিলেন।
সম্মেলন শেষে ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট বার্তায় বলেছেন, ওয়াশিংটনে ফিরে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির বিষয়ে আগামী সপ্তাহে তার সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করবেন তিনি। তখনই এ চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলা যাবে। তার আগে গতকাল শনিবার সম্মেলনের শেষ দিনে এক টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আলোচিত প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন জানাবে, নাকি প্রত্যাখ্যান করবেÑসেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামী সপ্তাহে। ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘প্রয়োজন অনুযায়ী সময়ে সময়ে ওঠানো একটি ধাপ্পাবাজি’ বলে অভিহিত করেছিলেন। এ ছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ‘চীনের ধোঁকাবাজি’ বলেও ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি।
প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্যারিসের ‘কপ-২১’ জলবায়ু চুক্তিটিকেও পুরনো ধারণা বলে নির্বাচনী প্রচারের সময় মত প্রকাশ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর যুক্তি দেখিয়ে ট্রাম্প জলবায়ু নীতি থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছিলেন। কারণ, এ চুক্তির আলোকে যে জলবায়ু তহবিল গঠিত হয়, তার বড় জোগানদাতা যুক্তরাষ্ট্র। এই তহবিল থেকেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো সাহায্য পায়। আলোচিত ওই চুক্তিতে পৃথিবীব্যাপী ৫৫ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাসের বিষয়ে বলা হয়েছিল। চুক্তিটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্বাক্ষর করেছিলেন। বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবিলায় ওই চুক্তিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন পরিবেশবাদীরা। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বিশ্বে কয়লার উত্তোলন কমিয়ে আনার কথা। কারণ, কার্বণ নিঃসরণে কয়লার ভূমিকা মুখ্য। আর জলবায়ু রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা অধিক তাপ উৎপাদন ও প্রকৃতি ধ্বংসের কারণে শক্তি উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার বন্ধের বিরুদ্ধে।
"