ডা. মহসীন কবির
কাউকে রক্ত দিতে চাইলে
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মনে করেন, রক্ত দান করা শরীরের জন্য ভালো। তাদের মতে, রক্ত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ে অবস্থিত বোনম্যারো (অস্থিমজ্জা) নতুন করে রক্ত তৈরিতে উদ্দীপ্ত হয় এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন রক্তকণিকায় শরীর তাজা হয়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বছরে তিনবার রক্তদান করে, তাদের শরীরের লোহিত রক্তকণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা অনেক বেড়ে যায়; এবং নিয়মিত রক্ত দান করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়া রক্তদানের মাধ্যমে রক্তদাতা বিনা মূল্যে জানতে পারে, তার শরীরে কোনো রোগ আছে কিনা। মোট কথা, রক্তদানে কোনো ক্ষতি নেই। বরং যে ব্যক্তি রক্ত দান করে, সে শারীরিক ও মানসিক তৃপ্তি নিয়ে আনন্দে বেঁচে থাকে। তাই আসুন, নিজে রক্ত দেই এবং অন্যকে রক্ত দিতে উৎসাহিত করি। এবার আসুন জেনে নিই রক্ত দান সম্পর্কিত কিছু তথ্য-
* সুস্থ-সবল মানুষ, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, তারা রক্ত দান করতে পারে।
* যাদের ওজন ৪৫ কেজির বেশি, তারা অনায়াসেই রক্ত দান করতে পারে।
* যে ব্যক্তি গত ৪ মাসের মধ্যে রক্ত দান করেনি, সে রক্ত দান করতে পারে।
* ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যেকোনো সময় রক্ত দান করা যায়।
* ভরা পেটে খাওয়ার ৩০ থেকে ৬০ মিনিট পরে রক্ত দেয়া ভালো।
* খালি পেটে রক্তদান না করে হালকা খাবার খেয়ে রক্ত দেয়া ভালো।
আমাদের দেশে মেডিক্যালের ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন ‘সন্ধানী’ বাংলাদেশে প্রথম ব্যাপকভাবে স্বেচ্ছায় রক্ত দান কর্মসূচির কাজ শুরু করে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাঁধন’, ‘কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন’ এবং ‘রেড ক্রিসেন্ট’সহ আরো অনেক সংস্থা স্বেচ্ছায় রক্তদান ও রোগীকে প্রয়োজনীয় নিরাপদ রক্ত সরবরাহ করে আসছে। ইদানীং আবার ইন্টারনেট এবং ফেসবুকের মাধ্যমেও রক্তদাতা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে রক্তদানের ক্ষেত্রে রক্তদাতার এইচআইভি, হেপাটাইটিস-‘বি’ এবং প্রয়োজনে আরো কিছু পরীক্ষাসহ ক্রস ম্যাচিং করা বাধ্যতামূলক।
লেখক : জনস্বাস্থ্যবিষয়ক লেখক ও গবেষক; ইনচার্জ, ইনস্টিটিউট অব জেরিয়েট্রিক মেডিসিন (আইজিএম), বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ, ঢাকা।
"