প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
মিয়ানমার থেকে শূন্য হাতে ফিরলেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কোনো গঠনমূলক সিদ্ধান্ত ছাড়াই মিয়ানমারে জাতিসংঘের পাঁচ দিনের সফর শেষ হয়েছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে রাখাইন সফরকারী কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, তাদের সফরে ‘কোনো বিজয় অর্জিত’ হয়নি। বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, মিয়ানমার থেকে শূন্য হাতে ফিরেছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। মালয়েশীয় সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমস লিখেছে, জাতিসংঘ কর্মকর্তারা মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সু চি ও সেনাপ্রধান মিং অংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেও সেই দুই আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কোনো কার্যকর অগ্রগতি হয়নি।
গত ২৫ আগস্টের পর সেনাবাহিনীর নৃশংসতায় রাখাইন থেকে পাঁচ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এএফপির খবর অনুযায়ী, জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেফ্রে ফেল্টম্যান তাদের বিষয়ে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি ও সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক বলেছেন, ‘পাঁচ দিনের সফরে জেফ্রে ফেল্টম্যান মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের কাছে মহাসচিব গুয়েতেরেসের আহ্বান পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি আক্রান্ত এলাকায় মানবিক সাহায্যকর্মীদের অবাধ প্রবেশাধিকার এবং পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসন দাবি করেছেন। আমি মনে করি না যে, জেফ্রের ওই সফরে আমরা দ্রুততার সঙ্গে কোনো বিজয় অর্জন করেছি। এটা হলো মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে চলমান আলোচনা।’
সফরকালে বিমানে করে জেফ্রে ফেল্টম্যানকে নিয়ে যাওয়া হয় রাখাইনে। বিমান থেকেই তিনি আগুনে পুড়ে যাওয়া গ্রামের পর গ্রাম দেখতে পান। সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান, রাখাইনে কেন সাহায্য পৌঁছে দিতে সাহায্যকর্মীদের এখনো বাধা দিচ্ছে মিয়ানমার। জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা একটা মূল্যবান প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মিয়ানমার সরকারের কাছে করতে হবে। আমরা দেখতে চাই যত দ্রুত সম্ভব সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
এর আগে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংগঠন জেনেভায় বলেছে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের কাছে অবরুদ্ধ হয়ে আছে ১০ থেকে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র আন্দ্রে মাহিকিক বলেছেন, দেশ ছেড়ে যাওয়ার অথবা হত্যার হুমকি থাকা সত্ত্বেও অনেক রোহিঙ্গা এখনো তাদের বাড়িতেই অবস্থান করছে। তবে যখন তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তখনই তারা দেশ ছাড়ছে, পালাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। তারা একে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
"