আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮

স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ, জামিন চান হুয়াওয়ের সিএফও

কারাগারে নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কানাডায় গ্রেফতার হওয়া চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের সিএফও মেং ওয়ানঝৌ। নিজের প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত শুনানির প্রাক্কালে কর্তৃপক্ষের কাছে এমন উদ্বেগ তুলে ধরেছেন তিনি। কানাডার সঙ্গে নিজের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে দেশটিতে নিজের সম্পদ থাকার কথাও জানান হুয়াওয়ের এই সিএফও। এমন বাস্তবতায় জামিন নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত চাইছেন তিনি। আদালতে উত্থাপিত মেং ওয়ানঝৌ’র নথির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর মেং ওয়ানঝৌকে গ্রেফতার করে কানাডার কর্তৃপক্ষ। গ্রেফতারের পর তার পক্ষ থেকে জামিন চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ ইস্যুতে কানাডীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ৪৬ বছরের এই চীনা নারী। চীনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। মেং ওয়ানঝৌকে অবিলম্বে মুক্তি না দেওয়া হলে কানাডাকে ‘চরম পরিণতি’ বরণ করার হুশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং। এ ঘটনাকে ‘অত্যন্ত ন্যক্কারজনক’ আখ্যা দিয়েছে তারা। তবে এ ব্যাপারে কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রত্যর্পণের অনুরোধে সাড়া দিয়ে হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে ও কোম্পানির প্রধান অর্থবিষয়ক কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝৌকে কানাডায় গ্রেফতার করা হয়। কানাডার বিচার বিভাগ জানায়, ১ ডিসেম্বর ভ্যাঙ্কুভার বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হন মেং। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মেংকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানায় কানাডার চীনা দূতাবাস।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আটককে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া এবং আন্তরিকভাবে তাদের আইনানুগ ও ন্যায়সঙ্গত অধিকারের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষের কাছে দৃঢ় আহ্বান জানাচ্ছে চীন। অন্যথায় যে ভয়াবহ পরিণাম হবে তার দায় পুরোপুরিভাবে কানাডাকে মেনে নিতে হবে।’

মেং ওয়ানঝৌকে কোন অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি। হুয়াওয়ের দাবি, অভিযোগ সম্পর্কে তাদের কাছে তেমন কোনো তথ্য নেই এবং মেং অন্যায় কোনো কিছু করেছেন বলেও তাদের জানা নেই। গত শুক্রবার তার জামিন শুনানি হলেও কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি আদালত। ছয় ঘণ্টার যুক্তি-তর্কের পর আদালত মুলতবি করা হয়। গতকাল সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিল।

গত ৬ ডিসেম্বরের আগে পর্যন্ত মেং-এর গ্রেফতারের কথা প্রকাশ করেনি কানাডীয় কর্তৃপক্ষ। এদিন প্রথমবারের মতো তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে এরইমধ্যে মেং ওয়ানঝৌকে গ্রেফতারের ঘটনায় নিজের সরকারের সংশ্লিষ্টতা থাকার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ট্রুডোর দাবি, কয়েক দিন আগেই তার সরকারকে মেং-এর গ্রেফতারের খবর জানানো হয়েছে। তবে এ গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কানাডার কোনো ভূমিকা নেই। ট্রুডো বলেন, ‘আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে পারি যে, আমরা এমন একটি দেশ যেখানকার বিচার বিভাগ স্বাধীন।’

মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেছেন, মেংকে গ্রেফতারের কথা তিনি আগে থেকে জানতেন। হুয়াওয়ে কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বারবার অভিযোগ করে আসছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। এই প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তি চীন সরকারের গোয়েন্দাগিরির কাজে ব্যবহৃত হতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করে আসছেন তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close