আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক তালিকার নিন্দা চীনের
চীন থেকে আমদানি করা ১৩০০ পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র পঁচিশ শতাংশ নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানানোর পর বেইজিং এর পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে।
হোয়াইট হাউস বলছে, মেধাস্বত্ব অধিকার বিষয়ে চীনের অন্যায্য চর্চার কারণেই আমদানি পণ্যে এ অতিরিক্ত শুল্কের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিস্তৃত এ তালিকায় চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, টেলিভিশন ও মোটরসাইকেলের মতো পণ্য আছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। মার্কিনের এ পদক্ষেপের ‘তীব্র নিন্দা ও দৃঢ বিরোধিতার’ কথা জানিয়েছে বেইজিং। বুধবার ওয়াশিংটনের চীনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এ ধরনের একতরফা ও সংরক্ষণবাদী পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মৌলিক নীতি এবং মূল্যবোধের গুরুতর লংঘন।’
বেইজিং বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপ চীন-মার্কিন কোনো দেশেরই স্বার্থই রক্ষা করবে না; এটি বিশ্ব বাজারের স্বার্থও ক্ষুণœ করবে। যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করলে চীন এর পাল্টা ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে ওয়াশিংটনের চীন দূতাবাস। প্রতিক্রিয়ায় তারা বলেছে, ‘চীনারা যেমনটা বলে, (এক্ষেত্রে) প্রতিদানই একমাত্র শালীন পন্থা। চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় এ বিরোধ নিষ্পত্তিতে কাজ করবে এবং চীনের আইন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর সমান মাত্রা ও শক্তির পাল্টা পদক্ষেপ নেবে।’
শুল্ক আরোপের মাধ্যমে চীনকে বাধা দেওয়ার যে পথে ট্রাম্প প্রশাসন হাঁটছে, তা বেইজিংকে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে এবং মার্কিন ভোক্তাদের চড়া দামে পণ্য কেনার পথে নিয়ে যাবে বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
গত মাসের প্রথম দিকে বিদেশ থেকে আমদানি করা স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্কের হার বাড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার প্রতিক্রিয়ায় চলতি সপ্তাহে ১২৮টি মার্কিন পণ্যে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করে বেইজিং।
বেইজিংয়ের ওই পাল্টা ব্যবস্থার পরপরই মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে ১৩০০ চীনা পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের নতুন এ পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করে ট্রাম্প প্রশাসন।
মঙ্গলবারের এ তালিকায় থাকা পণ্যগুলোর বার্ষিক আমদানি মূল্য ৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে ৫০৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য আমদানি করেছিল।
বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিয়ে মধ্যস্থতার দেখভাল করা বাণিজ্য প্রতিনিধির দফতর জানিয়েছে, চীনকে ক্ষতিকর কর্মকান্ড, নীতি ও চর্চার পথ থেকে সরিয়ে আনতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির কারণে বেইজিংয়ের পণ্যে এ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
খসড়া এ তালিকাটির পর্যালোচনা ও জনমত যাচাই শেষে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা পণ্যের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হবে; এজন্য দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে ধারণা বিবিসির।
নতুন এ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনাকে গত বছর চীনের মেধাস্বত্ব চর্চা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের তদন্তের নির্দেশের ধারাবাহিকতা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
চীন তার দেশে বিনিয়োগ করতে যাওয়া মার্কিন কোম্পানিগুলোকে প্রযুক্তি ভাগাভাগিতে চাপ দিচ্ছে তদন্তে এ ধরনের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে গত মাসেই ট্রাম্প বেইজিংয়ের কোন কোন পণ্যে শুল্ক আরোপ করা যায় তার তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
"