আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৭ মার্চ, ২০১৮

‘স্ক্রিপালের মেয়ের স্যুটকেসেই নার্ভ এজেন্ট ছিল’

যুক্তরাজ্যে বসবাস করা পক্ষত্যাগী সাবেক রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপালের মেয়ে ইউলিয়া মস্কো ছাড়ার সময় লুকিয়ে তার স্যুটকেসে নার্ভ এজেন্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেই এখন ধারণা করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। ঊর্ধ্বতন কয়েক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউলিয়ার স্যুটকেসে থাকা কাপড়, প্রসাধন বা কোনো উপহারের মধ্যে ওই নার্ভ এজেন্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাবার সঙ্গে দেখা করতে গত ৩ মার্চ রাশিয়া থেকে ইংল্যান্ডে যান ইউলিয়া। এরপর সলসবেরির বাসায় ইউলিয়া তার স্যুটকেস খোলার পর বাবা-মেয়ে দুজনই ওই নার্ভ এজেন্টের সংস্পর্শে আসে।

পরদিন ৪ মার্চেই সলসবেরির উইল্টশায়ারে একটি পার্কের বেঞ্চ থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় স্ক্রিপাল (৬৬) ও ইউলিয়াকে (৩৩) উদ্ধার করা হয়।

এতে করে একটি বিষয় পরিষ্কার যে, হত্যাচেষ্টাকারীরা হত্যাকান্ড ঘটাতে যুক্তরাজ্যের মাটিতে পদার্পণ করেনি। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ইউলিয়াকে দিয়ে তার বাবাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, বলছেন গোয়েন্দারা।

উইল্টশায়ার পুলিশের উপপ্রধান কনস্টেবল পল মিলসের মতে, ১৩১ জন ওই প্রাণঘাতী রাসায়নিকের সংস্পর্শে এসে থাকতে পারে। তবে ‘দ্য সান’ পত্রিকা জানিয়েছে, স্ক্রিপালের ভাগ্নি নীরবতা ভেঙে দাবি করেছেন, হত্যাচেষ্টার লক্ষ্য ছিল ইউলিয়াই। প্রেমিকের মায়ের সঙ্গে ইউলিয়ার বাক-বিতন্ডার জেরেই তাকে হত্যার চেষ্টা চলেছে। ইউলিয়ার স্বজনরা এ প্রচেষ্টার পেছনে তার হবু শাশুড়িকেই সন্দেহ করছে। ওই নারী রাশিয়ার একজন উচ্চপদস্থ নিরাপত্তা কর্মকর্তা। একজন পক্ষত্যাগী গুপ্তচরের মেয়ের সঙ্গে নিজের ছেলের বিয়ের কথা শুনে তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ছিলেন বলে জানা গেছে। ‘দ্য সান’ জানায়, মস্কোর উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা ইয়ারোস্লাভের অধিবাসী ভিক্টোরিয়ার (৪৫) মতে, সের্গেই স্কিপাল নয়, বরং তার মেয়েকেই মারার চেষ্টা চলেছিল।

উইল্টশায়ার থেকে বাবা-মেয়ে দুজনকে উদ্ধারের পর মেডিক্যাল পরীক্ষায় তাদের নোভিচক গ্রুপের একটি নার্ভ এজেন্ট দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। ’৭০ ও ’৮০’র দশকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এ সিরিজের নার্ভ এজেন্টগুলো তৈরি করেছে। যেগুলো সবচেয়ে মারাত্মক নার্ভ এজেন্ট (উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক) হিসেবে বিবেচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে এ ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা এটাই প্রথম।

এ ঘটনার পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরিসা মে রাশিয়ার কাছে এ ‘ধৃষ্টতার’ ব্যাখ্যা চান।

ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর মে তার দেশে থাকা ২৩ রুশ কূটনীতিককে ‘অঘোষিত গোয়েন্দা’ আখ্যা দিয়ে তাদের বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।

যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্তে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই দুই দেশসহ জার্মানি এবং ফ্রান্স যৌথভাবে রাশিয়ার কাছে এর ব্যাখ্যা দাবি করেছে।

যদিও রাশিয়া বরাবরই এ ঘটনায় তাদের হাত নেই বলে দাবি করে আসছে। এছাড়া, পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ব্রিটিশ কূটনীতিক বহিষ্কার করা হবে বলেও জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist