চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ১৩ আগস্ট, ২০১৭

আবারও ডুবেছে চট্টগ্রাম নগরজীবন অচল

বৃষ্টির পানিতে ফের চট্টগ্রাম নগরের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। অমাবস্যা ঘিরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে উঠায় গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। গতকাল শনিবার অবিরাম বর্ষণে পানিতে তলিয়ে গেছে খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, আছাদগঞ্জসহ হালিশহর, আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও ও বাকলিয়া এলাকা। দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। এ ছাড়া যানবাহন সংকটে কর্মস্থলে যাওয়া মানুষকে পড়তে হয়েছে চরম বিপাকে। থমকে দাঁড়িয়েছে নগরজীবন।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মেঘনাদ তংচংগ্যা বলেন, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৭০ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরো ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বৃষ্টিতে নগরীর চকবাজার, বাদুরতলা, আরাকান হাউজিং, বাকলিয়া, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, হালিশহর, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকসহ নিচু এলাকাগুলো হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায়।

নগরের বাকলিয়া ডিসি রোডের মুদি দোকানদার ইসলাম মিয়া বলেন, রাস্তার পাশের দোকানগুলো ও বাসাতে কয়েক দফা পানি ঢুকেছে। শুক্রবার থেকে কয়েকবার দোকান পরিষ্কার করেছি। বারবার পানি ঢুকে অনেক জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বাদুরতলার বাসিন্দা রফিক উদ্দিন জানান, একটু ভারী বৃষ্টি হলেই ঘরে হাঁটু পানি উঠে যায়। বৃষ্টি থামলে পানি নেমে যায়। এভাবে আসবাব, কাপড়-চোপড়, ঘরের মূল্যবান কাগজপত্র ভিজে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছি।

চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের বাসিন্দা আসলাম হোসেন বলেন, বি-ব্লকের নিচ তলার প্রায় প্রতিটি ভবনে পানি প্রবেশ করেছে। পানির কারণে ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় বাসিন্দা মুনীর চৌধুরী বলেন, শুক্রবার দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টিতে আবাসিক এলাকার সবকটি সড়কে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে যায়। বাসাবাড়িতেও পানি থৈ থৈ করছে। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ নৌকায় চলাচল করছে।

এদিকে, অভিযোগ রয়েছে, নগরীর খাল নর্দমাগুলো প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করা হয় না। লোক দেখানো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কারণে জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসী মুক্তি পাচ্ছে না। নগরীর প্রায় খাল আবর্জনা দিয়ে ভরাট হয়ে গেছে। এইসব খাল ভালো করে খনন করার তেমন উদ্যোগ নেই। বরং কিছু কিছু খাল থেকে আবর্জনা তুলে খালের পাড়ে রাখা হয়। ফলে বৃষ্টি হলে সেই আবর্জনাগুলো ফের খালে গিয়ে পড়ছে।

এদিকে, কালুরঘাট-আগ্রাবাদ সড়কে ফ্লাইওভারের কাজ চলায় এবং ওয়াসার মেরামত কাজের জন্য রাস্তা কাটা থাকায় আরাকান সড়কের বিভিন্ন স্থানেও পানি জমে গেছে। রাস্তায় যানজট ও জলজট থাকায় যানবাহন না পেয়ে সড়কের মোড়ে মোড়ে অসংখ্য যাত্রীকে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এই সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম জেলায় পাহাড়ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। সবাইকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হতে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে আমরা কাজ করছি। এ ছাড়া লাগাতার বৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ঢলে বন্যা ও নদী ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করতে বলা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist