পাবনা প্রতিনিধি

  ১৭ আগস্ট, ২০১৯

ঝুট কাপড়েই প্রাণ ফিরেছে পাবনার হোসিয়ারি শিল্পে

গার্মেন্টের ঝুট কাপড়ের তৈরি পোশাকে প্রাণ ফিরেছে পাবনার বিলুপ্তপ্রায় হোসিয়ারি শিল্পে। রাজধানী ঢাকা, চট্টগাম ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলের তৈরি পোশাক কারখানায় প্রতিদিন ফেলে দেওয়া হয় নমুনা এবং কাটিংয়ের কাপড়। এসব বাতিল কাপড়ই সম্ভাবনার জীবনকাঠি হয়ে ফিরেছে পাবনার হোসিয়ারি শিল্পে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ক্রমাগত চাহিদা বাড়ায় দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে এসব পোশাক এখন রফতানি হচ্ছে বিদেশেও। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতায় পরিত্যক্ত কাপড়ের এ শিল্প অর্থনীতিতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে পারে বলে মনে করছেন ঝুট সংশ্লিষ্টরা। গত ১০ বছরে পাবনার সদর উপজেলার আশপাশে বিভিন্ন গ্রামে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা গড়ে তুলেছেন সহস্রাধিক কারখানা। প্রতি বছর এসব কারখানায় উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ১৮ থেকে ২০ কোটি পিস গেঞ্জি। যার বাজার মূল্য প্রায় ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা। কর্মসংস্থান হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষের। এখানকার তৈরি পোশাক দেশের চাহিদা মিটিয়ে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। অনেক বেকার যুবকই এই কাজ করে সপ্তাহে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা আয় করছেন। আবার অনেকে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে এসে নিজ এলাকায় কাজ করতে পেরে খুশি।

সূত্র জানায়, চলতি বছর এসব কারখানার পণ্য রফতানি ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। সব সমস্যা কাটিয়ে আগামীতে এই পরিমাণ আরো বাড়বে বলে মনে করেন এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা। জমিলা খাতুন নামের এক নারী বলেন, আমি আগে ঢাকার এক গার্মেন্টসে কাজ করতাম। তখন যা আয় হতো বাড়ি ভাড়া এবং খাওয়া দিয়ে সব টাকা শেষ হয়ে যেত। এখন আমি নিজের বাড়ি থেকে স্বামী সন্তানের সঙ্গে বসবাস করে মাসে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করছি। রাশেদুজ্জামান রাসেল নামের এক হোসিয়ারি ব্যবসায়ী বলেন, ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে ঝুট কাপড় কিনে তিনি গেঞ্জিসহ নানা ধরনের পোশাক তৈরি করছেন। যা এখন ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হচ্ছে।

পাবনা হোসিয়াররি ম্যানুফাকচারার্স গ্রুপের সভাপতি বারিক হোসেন জনি বলেন, এক সময় পাবনার ঐতিহ্য ছিল হোসিয়ারি ব্যবসা। কাঁচামাল ও শ্রমিকের অভাবে ক্রমে তা হারিয়ে যাচ্ছিল। ঝুট কাপড় দিয়ে ব্যবসা করে পাবনার ৫৪২টি হোসিয়ারি কারখানা আবার সচল হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঝুট কাপড় ভারতে পাচাররোধ করতে পারলে এবং রফতানি নীতিমালা সংশোধন করলে বহু দেশে এখানকার তৈরি পোশাক রফতানি করা সম্ভব। তিনি এসব সমস্যা সমাধানে সরকারি সহায়তা জরুরি বলে মনে করেন। পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী বলেন, এ শিল্প প্রসারে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ইতিবাচক মানোভাব পোষণ করেছেন। এসব পণ্য রফতানিতে পাবনা চেম্বার সর্বাত্মক সহায়তা করবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close