প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৩ জুন, ২০১৮

হাটহাজারীতে বন্যা হালদায় ভাঙন

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। হালদা নদীর উপজেলার ধলই ইউনিয়নের কাজীপাড়া ও মাইজপাড়া এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাহাড়ি ঢলে নদীর এ দুই জায়গায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। গত রোববার সকাল থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত বর্ষণ অব্যাহত ছিল। আবার সোমবার বিকাল থেকে পুনরায় ভারী বর্ষণ শুরু হলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া দুই দিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানের সঙ্গে রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

হাটহাজারী প্রতিনিধি জানায়, চট্টগ্রাম-নাজিরহাট খাগড়াছড়ি মহাসড়কের এনায়েতপুর ও মুন্সির মসজিদ এলাকা, হাটহাজারী- রাউজন মহাড়কের সুবেদার পুকুরপাড়, পশ্চিম পাশ এবং ইছাপুর এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। নাজিরহাট মহাসড়কের ভাঙ্গাপুল এলাকার দোকানপাটেও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়া মিরেরহাট সংলগ্ন মুন্দরীছরার তিন স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙে পাহাড়ি ঢলের পানি লোকলয়ে ঢুকে পড়েছে। গতকাল সকালের দিকে দেখা গেছে, হাটহাজারী বাজারের কাচারি সড়ক, কলেজ গেট, থানা সংলগ্ন এলাকায় পানি উঠেছে। সেখানকার মহাসড়ক পানির নিচে। ব্যবসায়ী দোকানদারদের মধ্যে নেমে এসেছে হতাশা। হাটহাজারী-নাজিরহাট মহাসড়ক ও হাটহাজারী-রাউজান মহাসড়কের একাধিক স্থান পানি নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ওই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, ৩০ হেক্টর জমির ফসল পানি নিচে তলিয়ে গেছে। ২০০ পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। তাছাড়া ১ হাজার পুকুর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাঈদা আলম জানান, উপজেলার নি¤œ এলাকার বেশকিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকে গেছে।

উপজেলার উত্তর মার্দাশা ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসাইন চৌধুরী মাসুদ জানান, তার ইউনিয়নের রাস্তাঘাট এমনকি অনেক বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। বন্যার পরিস্থিতির অবস্থা দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার উননেছা শিউলী বিকালে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার জন্য অপেক্ষাকৃত উঁচু প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সভায় বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

বান্দরবান প্রতিনিধি জানায়, দুই দিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানের সঙ্গে রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বান্দরবানের বালাঘাটা রাঙামাটি সড়ক পানিতে প্লাবিত হওয়ায় বান্দরবানের সঙ্গে রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জেলার সাংগু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বাড়ার কারণে জেলার লামা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পাহাড়ি ঢলে বান্দরবান সদরের আর্মিপাড়া, মেম্বারপাড়া, শেরেবাংলা নগর, মধ্যমপাড়া, উজানীপাড়া, ক্যউচিংঘাটা, ভরাখালীসহ শহরের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে। শত শত ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকায় খরস্রোতা সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত পরিবারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সর্তক করা হচ্ছে।

১ ছবির ক্যাপশন : পাহাড়ি ঢলের তোড়ে পৌরসভার মিরেরহাটে দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়ে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist