জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট

  ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

লালমনিরহাটে রেলের ৭০০ কোয়ার্টার ঝুঁকিপূর্ণ

থাকেন বহিরাগতরা : রাতে বসে মাদকের হাট

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের ৭শ আবাসিক কোয়ার্টার এখন বেদখলে। ভবনের ছাদ এবং ওয়ালে ফাটল, জানালা-দরজা নেই, পাকা ছাদ বিধ্বস্ত, ইটের ফাঁকে ফাঁকে আগাছা, সর্বোপরি কোয়ার্টারগুলো মানুষ বসবাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। রাতে চলে বেআইনি কাজ, মাদকের হাট। দেখে মনে হয় ভুতুড়ে বাড়ি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন পরিত্যক্ত ও বিধ্বস্ত এসব কোয়ার্টারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু অসহায় পরিবার জীবনযাপন করছেন। শুধু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে লালমনিরহাট রেলওয়ের অধিকাংশ আবাসিক কোয়ার্টারের এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। লালমনিরহাটে রেলওয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসিক কোয়ার্টারের সংখ্যা ৯১০টি হলেও ৭০০টি কোয়ার্টার বেদখলে। পুরনো এবং জীর্ণ অধিকাংশ ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। রেলস্টেশন সূত্র জানায়, লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে জেলার সীমানা জুড়ে ১২টি স্টেশন রয়েছে। এসব স্টেশন সংলগ্ন আবাসিক কোয়ার্টারের স্টেশন মাস্টারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর বসবাসের জন্য রেল বিভাগের রয়েছে অনেক আবাসিক কোয়ার্টার। বর্তমানে যেগুলোর অধিকাংশই রয়েছে বহিরাগতদের দখলে। লাল রংয়ের এই ভবনগুলো ব্রিটিশ আমলের তৈরি। এখন জীর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে এই ভবনগুলোতে রেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা না থাকায় যে যার মতো দখল করে রেখেছে। এসব ভবন ধসে পড়ার ঝুঁকি মাথায় নিয়েই বসবাস করছেন বহিরাগতরা। সেই সঙ্গে চুরি হয়ে যাচ্ছে ভবনের ইটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। বহিরাগতদের দখলে থাকা এসব আবাসিক কোয়ার্টারে মাদক ব্যবসাসহ নানান অনৈতিক কাজের অভিযোগ অনেক পুরনো হলেও দেখার নেই কেউ। বহিরাগতদের বারবার উচ্ছেদ করা হলেও বেদখল হওয়া কোয়ার্টারগুলো দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভবনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্মকর্তা। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কোয়ার্টারগুলো এখন সাধারণ মানুষের কাছে মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব কোয়ার্টারে রাতের আঁধারে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা যুবকরা কোয়ার্টারের ইট, রড, কাঠ, দরজা-জানালা অবাধে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে রেলওয়ের কোটি কোটি টাকার সম্পদ খোয়া যাচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, আবাসিক কোয়ার্টারগুলোতে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, থানা ও ফাঁড়ি পুলিশ, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, মুহুরী, মুদি দোকানদার, বাস-ট্রাকচালক, হেলপার, হকার, এনজিও কর্মী, শ্রমিক ও দিনমজুররা দিব্যি বছরের পর বছর ধরে বসবাস করছেন। এসব বসবাসকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এক শ্রেণির রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অলিখিতভাবে কোয়ার্টারগুলো মাসিক ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। যার ভাড়ার টাকা কোনো দিনই সরকারের ঘরে জমা হয় না।

লালমনিরহাট রেলওয়ে আবাসিক কোয়ার্টার রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তা এ ব্যাপারে জানান, আবাসিক কোয়ার্টারগুলো কোনোভাবেই দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। তবে বিধ্বস্ত কোয়ার্টারগুলো মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনো কাজ হচ্ছে না। সরকারি এই ভবনের সঠিক তদারক এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মাণ করবে কর্তৃপক্ষ-এমনটিই প্রত্যাশা করেছেন স্থানীয় রেলওয়ের কর্মচারীরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist