নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ জানুয়ারি, ২০২০

৫৩ নং ওয়ার্ড

বিএনপির নির্বাচন যে কারণে জমছে না

তুরাগ তথা হরিরামপুর ইউনিয়ন অর্ন্তগত বর্তমান সিটির ৫৩ নং ওয়ার্ডে বিএনপির নির্বাচন এখনও জমে উঠেনি। কাউন্সিলর নির্বাচনে টুকটাক কাজ হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। তাছাড়া এ ওয়ার্ডে মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন একেবারে নাই বললেই চলে। ৫৩ নং ওয়ার্ডে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বিতর্কিত ধনকুবের হাজী মোস্তফাকে। থানা কমিটির একটি সূত্র জানায়, গত ১২ বছরে বিএনপির এ প্রার্থী নিজের সম্পদ রক্ষা ছাড়া দলীয় কোনও কাজে লাগেননি। তাছাড়া নিজে থানার সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় কোনও নেতাকর্মীর জেল জরিমানায় পাশে পাওয়া যায়নি তাকে। তাই নেতাকর্মীরা তার জন্য আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন না। গত ১২ বছরের মামলা-হামলায় কোনও একজন নেতাকর্মীর পাশে থেকে ১০ টাকা খরচ করারও নজির নেই তার। এ অবস্থায় দল তাকে মনোনয়ন দিলেও তিনি নির্বাচনটি জমাতে পারছেন না। এর আরও একটি বড় কারণ হচ্ছে তুরাগ বিএনপির অন্যতম বড় নেতা আতিকুর রহমান ব্যাক্তিগতভাবে মোস্তফাকে পছন্দ করেন না। নৈতিকতার জায়গা থেকেই মূলত আতিকুর রহমান তাকে দেখতে পারেন না। এছাড়া তুরাগ থানা বিএনপির সভাপতি গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে রাস্তায় মিছিল মিটিং করেছেন। তাই তারপক্ষেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নেয়া সম্ভব নয়। এ অবস্থায় আতিক কোনওভাবেই মোস্তফার নির্বাচনকে মসৃন হতে দিবেন না বলে অনেকেই বলছেন।

এর বাইরে মোস্তফার পরিবারটি তুরাগের রাজনীতিতে একটি রহস্যাবৃত পরিবার। তাদের ভাই ব্রাদারসহ অধিকাংশ আত্বীয়স্বজন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ইসলামী লেবাসধারি এ পরিবারটি এবার আওয়ামী লীগ থেকেও দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছে। ঐতিহ্যগত ভাবেই পরিবারটি আওয়ামী বিরোধী এবং পাকিস্তান আমল থেকেই জামায়াত ও কতিপয় বিতর্কিত ইসলামী দলের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়েছে বলে জানা যায়। এ অবস্থায় তার নির্বাচনের পক্ষে দলের সবাইকে এক করে আনা যাচ্ছে না। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে কেউ তেমন মাঠে নেই। মোস্তফার নির্বাচনী প্রচারণার এমন দৈন্যদশায় সবচেড়ে নাজুক অবস্থায় আছে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের ধানের শীষের প্রচারণা। এলাকা ঘুরে তেমন কোনও পোষ্টার দেখা যায়নি। তবে মোস্তফার নির্বাচনী কাজের সঙ্গে যুক্ত একজন থানার নেতা প্রতিবেদককে বলেন, প্রার্থী শুধু মুষ্টিমেয় কয়েকজন লোক নিয়ে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছেন, কিন্তু ৫০ হাজারের অধিক ভোটের এ ওয়ার্ডে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এমনটা চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক কেন্দ্রে প্রার্থীর এজেন্ট হওয়ার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ অবস্থার কথা জানান থানার একজন সহসভাপতিও। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ফুলবাড়িয়ার রফিকুল ইসলাম রবু ও তার ছেলে যুবদল নেতা আনোয়ার ডালি ছাড়া নির্বাচনী কাজে কেউ নেই। রবুর পরিবারের অন্য সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় স্থানীয় ইস্যুর কারণে তারাও শেষ পর্যন্ত মোস্তফার নির্বাচন ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন।

সরেজমিন দেখা যায়, এ ওয়ার্ডের প্রার্থীতা বাছাই থেকে শুরু করে অধ্যাবদি দল এবং দলের বাইরে তাকে শক্তিশালী প্রার্থী ভাবা হচ্ছে। তবে বাস্তবে এর কোনও ভিত্তি নেই। ২০ বছর আগে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় মোস্তফা ইউনিয়নভুক্ত ৬ নং ওযার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচনে নেমে তাকে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকতে হলেও টাকার খেলা খেলতে হবে বলে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বলছেন।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সিটি নির্বাচন,উত্তর,বিএনপি,নির্বাচন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close