বদরুল আলম মজুমদার

  ০১ জুন, ২০১৯

একটি ইফতার মাহফিল ও কিছু রাজনৈতিক সমীকরণ

রাজধানী উত্তরার একটি ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে অনেক রাজনৈতিক সমীকরণের হিসেব মেলাতে ব্যস্ত ঢাকা-১৮ আসনের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। শুক্রবার আয়োজিত ইফতার মাহফিলটি নানা কারণে নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। উত্তরার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বেশ কয়েকটি ধারা-উপধারার চল এতদিন দেখা গেলেও শুক্রবারের মাহফিলে তা একাকার হয়ে যায়। আছিরন-লতিফ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইফতার মাহফিলের অগ্রভাগে ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হাবিব হাসান। তার উদ্যেগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামের পাশাপাশি অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে অংশ নেন ঢাকা-১৮ আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর প্রবীন সদস্য এ্যাড. সাহারা খাতুন। এর বাইরে উত্তরার গণ্যমান্য রাজনীনিবিধসহ প্রায় সব কয়টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন শুক্রবারের ইফতার মাহফিলে।

শুক্রবারের ইফতার নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের অন্তত তিনজন নেতার সঙ্গে কথা হয় প্রতিদিনের সংবাদের। এদের কেউ কেউ ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ নিয়ে বেশ পুলকিত হয়েছেন। আবার কেউ বলছেন এতদিনকার গ্রুপ বা উপদল ভুলে গিয়ে উত্তরার রাজনীতি এখন সঠিক পথে আছে। তাদের একজন মনে করছেন, দুই দিনের আওয়ামী লীগার এসে কতো কিছুর স্বপ্ন দেখে, যা দেখে আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত। এসব রোধ করতে হলে এ অঞ্চলের প্রবীন আওয়ামী লীগের কাণ্ডারীদের একসাথেই চলতে হবে। আর এমনটা হতে থাকলে অনুপ্রবেশকারীরা অনেকটাই চুপসে যাবে।

এলাকার স্থানীয় নয় এমন একজন নেতা আক্ষেপ করে বলেন, আমি স্থানীয়দের বিশ্বাস করি না। ওরা রাজনীতির সার্থে কে কখন কার প্রিয় হয় তা বুঝা মুশকিল। তবে তাদের কর্মকাণ্ডের উপর আমরা সঙ্গত কারণেই নজর বাড়াবো। রাজনীতির কৌশল না দেখিয়ে ভালো নেতৃত্বের কৌশলটা শেখালে আমরা তাদের দেখে উপকৃত হতাম। সেই রকম কোয়ালিটি অর্জন না করে যাকে তাকে যখন তখন কাছে টেনে নেওয়ার প্রবনতা আমরা ঠিকভাবে মেনে নিতে পারি না। এটা দলের সিনিয়রদের ভাবতে হবে। কে কোথায় কখন কি আচরণ করেছিলেন।

তবে উত্তরার স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে একসাথে দেখতে পেয়ে বেজায় খুশি হয়েছেন যুবলীগ উত্তরের এক নেতা। তিনি প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আমরা বার বার বহিরাগত দ্বারা পরিচালিত হয়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দল বা রেষারেষি শিখেছি। এটার অবসান হওয়া দরকার। গতকালের ইফতার মাহফিলের অংশ গ্রহণ দেখে আমার অন্তত ভালো লেগেছে। উত্তরার স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা একসাথ হয়ে থাকলে আমরা আরো বেশি সাহস পাবো, সহযোগিতা পাবো।

তবে কয়েকটি প্রভাবশালী বলয় একসাথে মিলে যাওয়াকে স্থানীয় নির্বাচনের কৌশল হিসেবেই দেখছেন অনেকে। তারা মনে করছেন গত সিটির ওয়ার্ড নির্বাচনে অনেক প্রার্থীরা ভোটে জিতে আসলেও তাদের অনেকেই দলীয় নমিনেশন দেওয়া হতো না। গতবার প্রার্থীতা ওপেন থাকায় এ সুযোগ তারা কাজে লাগাতে পারলেও সামনে তা আর থাকছে না। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে ঢাকার দুটি সিটিতে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। তাই প্রভাবশালী বলয়ের নেতারা নিজেদের প্রার্থীকে নমিনেশন পাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে জিতিয়ে আনার একটি সাধারণ সমঝোতার অংশ হিসেবে সবাই এককাতারে সমবেত হয়েছেন।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ইফতার মাহফিল,রাজনৈতিক সমীকরণ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close