মুফতি মুহাম্মাদ যুবাইর খান
সহমর্মিতা ও সংযমের মাস
আজ সোমবার পবিত্র মাহে রমজানের মাগফিরাতের প্রথম দিন। এ মাস সংযম, সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মাস। মাহে রমজান নেক আমলের পাশাপাশি অন্যের সুখে সুখী হওয়া ও অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়ার তাগিদ দেয়। এ মাসে সারা দিনের দীর্ঘ উপবাসের কারণে শারীরিক অবসাদ ও ক্লান্তিবোধ আসে, তাই এ সময় অন্যের একটু সহায়তা ও সহমর্মিতা খানিকটা হলেও স্বস্তি এনে দিতে পারে রোজাদারের মনে। সুতরাং বরকতপূর্ণ এই মাহে রমজানে রোজা ও অন্যান্য ইবাদতে বরকত লাভের একটি অনিবার্য অংশ হচ্ছে, একে অন্যের সহযোগিতা ও সহমর্মিতা। তাছাড়া সহযোগিতা ও সহমর্মিতা একটি স্বতন্ত্র নেক আমলও। আর রমজানে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অন্যান্য ইবাদতের মতই অনেকাংশে বেড়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে একে অন্যকে সহযোগিতা করবে। গোনাহ ও জুলুমের কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করবে না। আল্লাহকে ভয় করে চল। নিশ্চয়ই আল্লাহর শাস্তি অতি কঠিন।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ২)।
হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের পার্থিব কষ্ট দূর করে দেয়, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার কষ্ট দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবীর অভাবের কষ্ট লাঘব করে, আল্লাহ তায়ালা তার দুনিয়া ও আখেরাতের অভাবের কষ্ট লাঘব করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। আল্লাহ তায়ালা বান্দার সহায়তায় থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সহায়তায় থাকে (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-৭০২৮)।
রমজানে ইফতার, রাতের খাবার ও সাহরির খাবার প্রস্তুতির বাড়তি একটা চাপ থাকে। এ কারণে ঘরের পুরুষ লোকেরা স্ত্রী লোকদের সহায়তা করতে পারেন। পুত্রবধূ শাশুড়ির কাজে, শাশুড়ি পুত্রবধূর কাজে সহায়তা করতে পারেন। ননদ ভাবির কাজে, মেয়ে তার মায়ের কাজেও সহায়তা করতে পারেন ইত্যাদি।
ঘরের নারী সদস্যরাও রোজা রাখেন। এ মাসে অন্যান্য ইবাদতের পাশাপাশি নফল ইবাদতের আগ্রহ তাদেরও থাকে। রমজানের শারীরিক অবসাদ ও ক্লান্তিবোধ তাদেরও কোনো অংশে কম হয় না। এক্ষেত্রে তাদের কাজে যদি সহায়তা না-ও করতে পারি কমপক্ষে এটুকু তো করা উচিত যে, নিজেদের চাহিদামতো কিছু না হলে অথবা কোনোকিছুর ঘাটতি হলে, তা সহ্য করে নেওয়া। সংযমী হওয়া। দান-সদকার হকদার যে কাউকেই দান করলে এ মাসে দানের বরকত ও সাওয়াব লাভ করা যাবে। আমিন।
"